মোবাইল ফোন টাওয়ার। মোবাইল টেলিফোনি (ইংরেজি: Mobile Telephony)

মোবাইল ফোন টাওয়ার।
মোবাইল টেলিফোনি (ইংরেজি: Mobile Telephony)

মোবাইল ফোন টাওয়ার।
মোবাইল টেলিফোনি (ইংরেজি: Mobile Telephony) হচ্ছে এক ধরনের টেলিযোগাযোগ  পদ্ধতি যেখানে এক স্থানে স্থির থাকার পরিবর্তে চলাচলরত অবস্থায় ফোন ব্যবহার করা যায়। মোবাইল ফোন, বেস স্টেশনের একটি টেরেস্ট্রিয়াল সেলুলার নেটওয়ার্কের সাথে সংযুক্ত থাকে। অপরপক্ষে, স্যাটেলাইট ফোন সংযুক্ত থাকে কক্ষপথের স্যাটেলাইটসমূহের সাথে। পৃথিবীর সব ফোনকে ব্যবহারোপযোগী রাখতে উভয় নেটওয়ার্কই পাবলিক সুইচড টেলিফোন নেটওয়ার্ক (পিএসটিএন) এর সাথে আন্তঃসংযুক্ত থাকে।

২০১০ সালের হিসাব অনুযায়ী, পৃথিবীতে প্রায় ৫০০ কোটি সেলুলার মোবাইল গ্রাহক রয়েছে।

ইতিহাস সম্পাদনা

মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের টেলিফোন ও টেলিগ্রাফ বিভাগের নথি থেকে জানা যায়, তারা ১৯১৫ সালে তারবিহীন ফোন নিয়ে আলোচনা শুরু করেছিলো। আবার তারা এর প্রযুক্তিগত বিস্তৃতি ও তাদের তার প্রযুক্তির আধিপত্য নিয়েও সংকিত ছিলো।[১]

দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পরের বছর পাবলিক মোবাইল ফোন সিস্টেম প্রথম অন্তর্ভুক্ত হয়। কিন্তু এর প্রযুক্তিগত উন্নয়ন সংঘাত শুরুর পূর্বেই শুরু হয়েছিলো। ১৯৪৬ সালে যুক্তরাষ্ট্রের মিসৌরি এলাকার সেইন্ট লুইসে প্রথম মোবাইল ফোন সিস্টেম উন্মুক্ত হয়। তবে অন্যান্য দেশ শুরু করে পরবর্তী দশকে যুক্তরাজ্য ১৯৫৮ সালে সাউথ ল্যাংকাশায়ার রেডিওফোন হিসেবে 'সিস্টেম-১' ম্যানুয়াল রেডিওটেলিফোন সার্ভিস শুরু করে।[২] এই সময় হ্যান্ডসেট পরিচিতি ব্যবহার করে এক জন অপারেটরের মাধ্যমে এক ফোন অপর সাধারণ ফোন হ্যান্ডসেটে কল দেয়া হত।[৩] ফোনটি একটি যানে বিশাল বাক্সের মধ্যে ভালভ ও অন্যান্য ইলেক্ট্রনিক সামগ্রী সজ্জিত অবস্থায় রাখা হত। যুক্তরাজ্যের  বেশীরভাগ এলাকা সংযুক্ত করতে আগের চেয়ে উন্নত ম্যানুয়াল সার্ভিস (সিস্টেম-৩) বর্ধিত করা করা হয়েছিল। তা সত্ত্বেও ১৯৮১ সালের 'সিস্টেম-৪' চালুর আগ পর্যন্ত স্বয়ংক্রিয় ব্যবস্থা শুরু হয়নি। নন-সেলুলার হওয়া সত্ত্বেও জার্মানভিত্তিক প্রযুক্তি বি-নেটজ যুক্তরাজ্যে খুব দ্রুতই ছড়িয়ে পড়েছিল। শেষ পর্যন্ত স্কটল্যান্ডে বন্ধ হওয়ার পূর্ব পর্যন্ত এর কার্যক্রম চালু ছিল। ১৯৮৫ সালের দুটি সেলুলার সিস্টেম- দ্য ব্রিটিশ টেলিকম/সেক্যুরিকর কলনেট সার্ভিস এবং রিক্যাল/মিলকম/বারক্লেস 'ভোডাফোন' (ভয়েস+ডেটা+ফোন) সার্ভিস দ্বারা এটি তুলে দেয়া হয়। এই সেলুলার সিস্টেমগুলো যুক্তরাষ্টের এডভ্যান্সড মোবাইল ফোন সিস্টেম (এএমপিএস) এর উপর ভিত্তি করে তৈরি। এর রূপান্তরিত প্রযুক্তি টোটাল এক্সেস কমিউনিকেশন সিস্টেম (টিএসিএস) নামে পরিচিত।

১৯৯৭ সালে বেল ল্যাবরেটরি প্রথম সেলুলার রেডিও টেলিফোন নেটওয়ার্ক প্রস্তাব করে। কল সুইচিং অবকাঠামো দ্বারা সমর্থিত অধিক্রমণকারী ছোট সেল সাইটের উন্নয়ন ছিল এর প্রাথমিক উদ্ভাবন। যা কিনা ব্যবহারকারীকে এক সেল সাইট থেকে অন্য সেল সাইটে যাওয়ার সময় কল ড্রপ থেকে রক্ষা করে। ১৯৫৬ সালে প্রথমে সুইডেনে এমটিএ সিস্টেম চালু হয়। মোবাইল টেলিফোনি উন্নয়নের প্রচেষ্টা শুরুর দিকে দুটি গুরুত্বপূর্ণ চ্যালেঞ্জের মুখে পড়েঃ একসঙ্গে কয়েকটি তুলনামূলক কম উপলব্ধ ফ্রিকোয়েন্সি  ব্যবহার করা এবং ব্যবহারকারীকে তাদের কলগুলি বাদ না দিয়ে এক স্থান থেকে অন্য স্থানে স্থানান্তর করার অনুমতি প্রদান করা। উভয় সমস্যাগুলি বেল ল্যাবসের কর্মচারী আমোস জোয়েলের দ্বারা সমাধান করা হয়েছিল এবং ১৯৭০ সালে মোবাইল যোগাযোগ ব্যবস্থার জন্য একটি পেটেন্ট নিবন্ধন করা হয়েছিল। [৪] যাইহোক, একটি ব্যবসায়িক পরামর্শদাতা প্রতিষ্ঠান হিসেব করেছিলো, সেল টাওয়ার নির্মানের উচ্চ মূল্যের কারণে যুক্তরাষ্ট্রের বাজারে ১০০,০০০ ইউনিট এবং সমগ্র বিশ্ব বাজারে ২০০,০০০ ইউনিটের বেশী মোবাইল ফোনের চাহিদা নেই। যার ফলে, বেল ল্যাব  এই সিদ্ধান্তে উপনীত হয় যে আবিষ্কারটি "খুব একটা ফলপ্রসূ হবেনা", এ কারণে এই উদ্ভাবনটির বাণিজ্যিকীকরণ সম্ভব হয়নি। আবিষ্কারটি ২০০৮  সালে ন্যাশনাল ইনভেন্টর হল অফ ফেমে জোয়েল ইনডাকশন পদক লাভ করে। [৫] প্রথম হ্যান্ডহেল্ড মোবাইল ফোন কলটি করেন মার্টিন কুপার, ৩ এপ্রিল, ১৯৭৩ তারিখে। এরপর থেকে বেল ল্যাবের প্রতিপক্ষ মটোরোলা [৬] প্রথম হওয়ার প্রতিযোগিতায় নামে। বেল ল্যাব ১৯৭৮ সালে শিকাগোতে প্রথম পরীক্ষা মূলক সেলুলার নেটওয়ার্ক স্থাপন করেছিলো। এই পরীক্ষামূলক সিস্টেমটি ১৯৮২ সালে বাণিজ্যিক ব্যবহারের জন্য এফটিসি থেকে এটিসি লাইসেন্স প্রাপ্ত হয়। পরে এটিটি এর ভাঙ্গন ব্যবস্থার অংশ হিসেবে, এএমপিএস প্রযুক্তি স্থানীয় টেলকোসের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছিলো। প্রথম বাণিজ্যিক ব্যবস্থা অক্টোবর ১৯৮৩ সালে শিকাগোতে চালু হয়।[৭][৮] মটোরোলা দ্বারা ডিজাইন করা একটি ব্যবস্থা ১৯৮২ সালের গ্রীষ্মকাল থেকে ওয়াশিংটন ডি.সি. / বল্টিমোর এলাকায় পরিচালিত হয় এবং পরের বছর থেকে পরিপূর্ণ ভাবে জনসাধারণকে সেবা দেয়া শুরু করে।[৯] ১৯৭৮ সালে এনটিটি দ্বারা[৯] ১৯৭৮ সালে এনটিটি দ্বারা জাপানের প্রথম বাণিজ্যিক রেডিও টেলিফোনি পরিষেবাটি চালু করা হয়।

প্রথম সম্পূর্ণ স্বয়ংক্রিয় প্রথম প্রজন্মের নেটওয়ার্ক ছিল নর্ডিক মোবাইল টেলিফোন (এনএমটি) সিস্টেম, যা একযোগে ডেনমার্ক, ফিনল্যান্ড, নরওয়ে এবং সুইডেনে ১৯৮১ সালে চালু হয়।[১০] এনএমটি হল প্রথম মোবাইল ফোন নেটওয়ার্ক যা আন্তর্জাতিক রোমিং করতে সক্ষম হয়। সুইডিশ তড়িৎ প্রকৌশলী অস্ট মাকিতালো (Öst Mäkitalo) ১৯৬৬ সালে এই দৃষ্টিভঙ্গিতেই কাজ শুরু করেন, এবং তিনি এনএমটি সিস্টেমের জনক হিসেবে বিবেচিত হন এবং কেউ কেউ তাকে সেলুলার সিস্টেমের জনকও বলে। [১১][১২]

সেলুলার প্রযুক্তির আবির্ভাব ইউরোপীয় দেশগুলো যুক্তরাষ্ট্র ও জাপানকে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করার জন্য একটি প্যান ইউরোপীয় সেলুলার প্রযুক্তি উন্নয়নে সাহায্য করেছিল। যার ফলে আগে জিএসএম ছিলো মূলত Groupe Spécial, এবং এর কাজ ছিলো স্পেসিফিকেশন এবং উন্নয়ন সম্পর্কিত, কিন্তু এখন এটি দিয়ে 'গ্লোবাল সিস্টেম ফর মোবাইল কমিউনিকেশন' বোঝায়। পরে জিএসএম স্ট্যান্ডার্ডটি ইউরোপের বাইরে ছড়িয়ে পড়ে এবং বর্তমানে এটি বিশ্বের সবচেয়ে ব্যাপকভাবে ব্যবহৃত সেলুলার প্রযুক্তি ও কার্যত মান। জিএসএমএ শিল্প সমিতি, বর্তমান বিশ্বের ২১৯ টি দেশের প্রায় ৮০০ মোবাইল নেটওয়ার্ক অপারেটরের প্রতিনিধিত্ব করে[১৩]। বর্তমানে বিশ্বে দেশ অনুযায়ী মোবাইল ফোন প্রস্তুতকারকদের তালিকা  অনুযায়ী ৫ বিলিয়নের বেশি ফোন সাবস্ক্রিপশন আছে বলে অনুমান করা হয় (যদিও কিছু ব্যবহারকারীদের একাধিক সাবস্ক্রিপশন, বা নিষ্ক্রিয় সাবস্ক্রিপশনও রয়েছে)। যা অবশ্য মোবাইল ফোনকে বিশ্বের সবচেয়ে বেশি সম্প্রচারিত প্রযুক্তি এবং সবচেয়ে বহুল ব্যবহার্য ইলেকট্রনিক যন্ত্রে রূপান্তর করেছে।[১৪]

প্রথম মোবাইল ফোনে ইন্টারনেট সংযোগ করতে এবং তার বিহীন ইমেইল করতে ১৯৯৬ সালে নোকিয়া  কমিউনিকেটর মুক্ত হয় এবং স্মার্টফোন নামে একটি নতুন ধরনের বহুমুখী ডিভাইস তৈরি করা হয়। জাপানে ১৯৯৯ সালে প্রথম মোবাইল ইন্টারনেট সেবা আই-মোড সার্ভিসের অধীনে এনটিটি ডোকোমো দ্বারা চালু হয়। ব্যক্তিগত কম্পিউটারের পরিবর্তে ২০০৭ সাল নাগাদ বিশ্বজুড়ে ৭৯৮ মিলিয়ন লোক ইন্টারনেট  বা সমমানের মোবাইল ইন্টারনেট সেবা যেমন ওয়াপ এবং আই-মোড অ্যাক্সেস ব্যবহার করে।সেলুলার সিস্টেম সমূহ সম্পাদনা


১৯৯৭ সাল থেকে ২০০৭ সাল পর্যন্ত মোবাইল ফোন ব্যবহারকারী।
মোবাইল ফোন সমূহ যে কোনো সেল সাইট বেজ স্টেশন থেকে অণুতরঙ্গ এন্টেনার সাহায্যে বেতার তরঙ্গ আদানপ্রদান করে। এই সাইট সমূহ সাধারণত কোন টাওয়ার, উঁচু খুটি, বা ভবনের উপর বসানো থাকে। পরবর্তীতে তার যোগাযোগ ও সুইচিং সিস্টেমের সাথে সংযুক্ত হয়। ফোনের থাকে কম ক্ষমতাসম্পন্ন ট্রান্সিভার, যা নিকটবর্তী (সাধারণত ৮-১৩ কি.মি.) সেল সাইটে ভয়েস ও ডেটা স্থানান্তর করে। স্বাভাবিক পরিধির নেটওয়ার্ক মান ঠিক রাখতে কখনো কখনো রিপিটার ব্যবহার করা হয়ে থাকে। কম কভারেজের ক্ষেত্রে সেলুলার রিপিটার ব্যবহার করা হয়ে থাকে, যা দীর্ঘ পরিসরে উচ্চ-ক্ষমতাসম্পন্ন ডিশ অ্যান্টেনা অথবা ইয়াগি অ্যান্টেনা স্বাভাবিক পরিসরের (রেঞ্জ) বাইরে একটি সেল টাওয়ারের সাথে যোগাযোগ করার জন্য ব্যবহার করা হয়। এবং ছোট ছোট পরিসীমা বা রেঞ্জ বিশিষ্ট লোকাল অ্যান্টেনা যা কয়েক মিটারের মধ্যে যেকোনো সেলফোনের সঠিকভাবে কাজ করার জন্য ব্যবহৃত হয়।

যখন মোবাইল ফোন বা ডেটা ডিভাইস চালু থাকে তখন এটি মোবাইল টেলিফোন এক্সচেঞ্জের সাথে নিবন্ধিত হয়, অথবা তার একক শনাক্তকারীর সাথে সুইচ করে এবং যখন একটি টেলিফোন কল আসে তখন যাতে মোবাইল সুইচ দ্বারা সতর্ক হতে পারে। হ্যান্ডসেট ক্রমাগত পার্শ্ববর্তী বেস স্টেশন থেকে প্রাপ্ত শক্তিশালী সংকেত গ্রহণ করে এবং সাইটের মধ্যে অঙ্গিভূতভাবে সুইচ করে। ব্যবহারকারী যখন নেটওয়ার্কে ঘুরে বেড়ায়, তখন "হ্যান্ডওফ" কলটি বিঘ্নিত না করে ডিভাইসগুলিকে স্যুইচ করার অনুমতি দেয়।

সেল সাইট গুলোর অপেক্ষাকৃত কম শক্তিসম্পন্ন (প্রায় এক বা দুটি ওয়াট) রেডিও ট্রান্সমিটারগুলো তাদের উপস্থিতি সম্প্রচার করে এবং মোবাইল হ্যান্ডসেট ও সুইচের মধ্যে যোগাযোগ পুনঃসম্প্রচার করে। সুইচ একই বেতার পরিষেবা প্রদানকারী বা পাবলিক টেলিফোন নেটওয়ার্কের অন্য গ্রাহকের সাথে সংযোগ করে, যার মধ্যে অন্য বেতার সার্ভিস প্রোভাইডার অন্তর্ভুক্ত। এই সাইটগুলির বেশিরভাগ বিদ্যমান পরিবেশের সাথে খাপ খাইয়ে নেয়, বিশেষত প্রাকৃতিক বৈশিষ্ট্যমমন্ডিত এলাকাগুলোয়।

হ্যান্ডসেট এবং সেল সাইটের মধ্যকার সংলাপ হল ডিজিটাল ডেটার একটি স্ট্রিম এবং ডিজিটাল করা অডিও (প্রথম প্রজন্মের এনালগ নেটওয়ার্ক ব্যতীত) যার অন্তর্ভুক্ত। মোবাইল ফোন অপারেটরগুলো যা গ্রহণ করেছে এই প্রযুক্তি তাই অর্জন করেছে। প্রযুক্তিগুলো প্রজন্ম দ্বারা গোষ্ঠীভুক্ত করা হয়। প্রথম প্রজন্মের সিস্টেমগুলি ১৯৭৯ সালে জাপানে চালু হয়েছিল এবং এর সবগুলি ছিল এনালগ এবং এমএমপিএস অথবা এনএমটির অন্তর্ভুক্ত। দ্বিতীয় প্রজন্মের সিস্টেম শুরু হয় ফিনল্যান্ডে 1991 সালে। এটি সম্পূর্ণ ডিজিটাল এবং জিএসএম, সিডিএমএ  এবং টিডিএমএর অন্তর্ভুক্ত।

সেলুলার প্রযুক্তিটির প্রকৃতি: কখনো কখনো একটি সেল ফোন কভারেজের বাইরে চলে যায় (যেমন, রাস্তার সুড়ঙ্গে), যখন সংকেত পুনরায় প্রতিষ্ঠিত হয় তখন ফোনটি নিকটবর্তী সেল-টাওয়ারে 'পুনঃসংযোগ' সংকেত পাঠায় এবং এটি সংকেত প্রেরণ করার জন্য আবার প্রস্তুত হয়। 'ক্লোনিং' এর কারণে অনেক ফোন ঝুকিতে রয়েছে। যথোপযুক্ত সরঞ্জাম দ্বারা, পুনঃসংযোগ সংকেতকে আটকে দেয়া সম্ভব এবং 'ফাঁকা (ব্লাঙ্ক) ফোনে' থাকা তথ্য এনকোড করে প্রকৃত ফোনটিকে 'ফাঁকা' ফোনটির সঠিক নকল করাও সম্ভব (যাকে ক্লোনিং বলা হয়) এবং 'ক্লোন' করা ফোন থেকে কল করা হলে মূল অ্যাকাউন্ট থেকেই চার্জ করা হয়। এই সমস্যাটি প্রথম প্রজন্মের অ্যানালগ প্রযুক্তিতে ব্যাপকভাবে বিস্তৃত ছিল, তবে জিএসএম এর মত আধুনিক ডিজিটাল প্রযুক্তিতে নিরাপত্তা ব্যবস্থা উন্নত করা হয় যা ক্লোনিংকে কঠিন করে তোলে।


একটি মোবাইল ফোন টাওয়ার।
ব্যবহারকারীর শরীরের কাছাকাছি একটি ট্রান্সমিটার  থাকার সম্ভাব্য ক্ষতি সীমিত করার প্রচেষ্টাস্বরূপ, ভিন্ন ট্রান্সমিটারবিশিষ্ট প্রথম স্থির / মোবাইল সেলুলার ফোন, গাড়িতে অবস্থিত অ্যান্টেনা এবং হ্যান্ডসেটগুলোর (যেগুলো কার ফোন এবং ব্যাগ ফোন নামে পরিচিত ছিল) ছিল সর্বোচ্চ ৩ ওয়াটের সীমিত কার্যকর বিকিরণ শক্তি। আধুনিক হ্যান্ডহেল্ড সেলফোন ব্যবহারকারীর খুলি থেকে ট্রান্সমিশন অ্যান্টেনার অন্তত ইঞ্চি পরিমাণ দুরত্ব থাকতে হবে। সর্বোচ্চ ট্রান্সমিশন শক্তি ০.৬ ইআরপি এর মধ্যে সীমিত থাকতে হয়। সম্ভাব্য বায়োলজিক্যাল প্রভাবগুলির উপর নির্ভর করে, আধুনিক হ্যান্ডহেল্ড ফোনগুলির হ্রাসপ্রাপ্ত পরিসীমা (রিডিউসড রেঞ্জ) গ্রামীণ এলাকায় কার / ব্যাগ ফোনগুলির তুলনায় তাদের ব্যবহারযোগ্যতা সীমাবদ্ধ করে এবং হ্যান্ডহেল্ডগুলিকে প্রয়োজন হয় যাতে সেল টাওয়ারগুলি তাদের সম্প্রচার ক্ষমতার অভাবের জন্য অনেক কাছাকাছি থাকে।ব্যবহার সম্পাদনা

সাধারণ ব্যবহারকারীদদের দ্বারা সম্পাদনা

এই রেলফোন উত্তর আমেরিকার কিছু ট্রেনে পাওয়া যায়, যা সেলুলার প্রযুক্তি ব্যবহার করে।
আরও দেখুন: দেশ অনুযায়ী মোবাইল ফোন প্রস্তুতকারকদের তালিকাসমাজের উপর প্রভাব সম্পাদনা

মানব স্বাস্থ্য সম্পাদনা
মোবাইল ফোন ব্যবহারের শুরু থেকেই সাধারণ মানুষ ও বিজ্ঞানীদের মধ্যে এর নিয়মিত ব্যবহার থেকে এর স্বাস্থ্যর উপর কার্যকর প্রভাব নিয়ে উদ্বেগ রয়ে গেছে। [৩১] কিন্তু ২০০৮ সাল পর্যন্ত আমেরিকান মোবাইল ফোন গুলো কলের চেয়ে টেক্সট বার্তা বেশী আদানপ্রদান করেছে। [৩২] ভেরিজন তাদের কিছু গ্রাহকের অনুরোধে নেটওয়ার্ক ব্যবহারে নিয়ন্ত্রন আরোপ করেছিলো। কারনটি ছিলো বাচ্চারা যাতে ঠিকমতো ঘুমোতে পারে। [৩২] এছাড়াও যানবাহন, ট্রেন, সিনেমাহলে ফোন ব্যবহার নিয়ন্ত্রণের উদ্যোগ নেয়া হয়েছিলো। একটি সমীক্ষা অনুসারে, ১৬ থেকে ৩০ বছর বয়সের ৪০ শতাংশ মানুষ গাড়ি চালানোর সময় টেক্সট করে। এবং অন্য একটি সমীক্ষামতে, ৪০ শতাংশ অল্পবয়সী না দেখেই টেক্সট করতে পারে। [৩২]

১৮ টি সমীক্ষা থেকে সেল ফোন ব্যবহার ও ব্রেইন ক্যান্সারের মধ্যে যোগসূত্র পাওয়া গেছে। এই গবেষণার একটি পর্যালোচনায় পাওয়া গেছে যে একাধারে ১০ বছর বা তারও বেশি সেল ফোন ব্যবহার "অ্যাকাউস্টিক নিউরোমা এবং গ্লিওমা'র ঝুঁকির একটি সুসংগত প্যাটার্ন তৈরি করে।"[৩৩] টিউমারগুলি বেশিরভাগ সময়ই মাথার পাশে পাওয়া যায় যার সাথে মোবাইল ফোন যোগাযোগের সম্পর্ক রয়েছে। ২০০৮  সালের জুলাইয়ে পিটাসবার্গ ক্যান্সার ইনস্টিটিউটের পরিচালক ড. রোনাল্ড হেরবারম্যান মোবাইল ফোনের বিকিরণ সম্পর্কে সতর্ক করে দিয়েছিলেন। তিনি বলেন যে, মোবাইল ফোনের ও মস্তিষ্কের টিউমারগুলির মধ্যে সংযোগের কোন সুনির্দিষ্ট প্রমাণ নেই, তবে পর্যাপ্ত গবেষণা থেকে বোঝা যায় যে মোবাইল ফোন ব্যবহারের সাবধানতা অবলম্বন করা উচিত।[৩৪] বিকিরণ পরিমাণ হ্রাস করতে হ্যান্ডসফ্রি ডিভাইস ব্যবহার করা যেতে পারে অথবা কলের বিকল্প হিসেবে টেক্সটিং করা যেতে পারে। গ্রামাঞ্চলে মোবাইল ফোন ব্যবহার সীমিত করা যেতে পারে। যে মোবাইল ফোনের টাওয়ারগুলি দূরে অবস্থিত সেগুলি থেকে উচ্চতর বিকিরণ উৎপন্ন হয়।[৩৫]

রয়টার্সের মতে, ব্রিটিশ অ্যাসোসিয়েশন অব ডার্মাটোলজিস্টের মুখোপাধ্যায় মোবাইল ডিভাইসের বহির্ভাগে পাওয়া নিকেলপৃষ্ঠের এলার্জি প্রতিক্রিয়া দ্বারা মুখ ও গালে ফুসকুড়ি ওঠার ব্যাপারে সতর্ক করেছেন। এমনও একটি তত্ত্ব রয়েছে যে, এমন সমস্যা আঙ্গুলেও হতে পারে যদি কেউ মেটাল মেনু বোতামগুলি দিয়ে টেক্সট ম্যাসেজিংএ প্রচুর সময় ব্যয় করে। ২০০৮ সালে, প্রভিডেন্স, রোড আইল্যান্ডের ব্রাউন বিশ্ববিদ্যালয়ের লিয়োনেল বারকোভিচ এবং তার সহকর্মীরা আটটি ভিন্ন নির্মাতাদের কাছ থেকে ২২টি জনপ্রিয় হ্যান্ডসেট পরীক্ষা করে এবং এর মধ্যে ১৯ টি ডিভাইসে নিকেল পাওয়া যায়।[৩৬]

মানব আচরণ সম্পাদনা
সংস্কৃতি ও প্রথা সম্পাদনা

সেলুলার মোবাইল ফোন অবসর সময়ে যে কোনো জায়গা থেকে মানুষকে যোগাযোগের সুযোগ করে দেয়।
১৯৮০ থেকে ২০০০ এর মধ্যে, মোবাইল ফোন খুব মূল্যবান যন্ত্রে রূপান্তরিত হয়েছিল এবং সাধারণত অভিজাত ব্যবসায়ীরা ব্যবহার করত। এছাড়া সাধারণ ব্যবহারকারীরা ব্যক্তিগত যোগাযোগের জন্য ব্যবহার করত। বেশিরভাগ দেশে, স্থায়ী ল্যান্ডলাইন ফোনের সংখ্যাকে ছাড়িয়ে গেছে, ২০০৭ সালে যেখানে ল্যান্ডফোন ছিল ১.৩ বিলিয়ন সেখানে মোবাইল ফোন গ্রাহক সংখ্যা ছিল ৩.৩ বিলিয়ন।

জাপান ও দক্ষিণ কোরিয়া থেকে ইউরোপ, মায়ানমার, সিঙ্গাপুর, তাইওয়ান ও হংকংয়ের অনেক বাজারে ৮-৯ বছর বয়সীদের মধ্যে বেশিরভাগেরই মোবাইল ফোন রয়েছে এবং ৬-৭ বছর বয়সী গ্রাহকদের জন্য নতুন অ্যাকাউন্ট খোলা হয়। জাপানে প্রথমবারের মতো বাচ্চাদের ব্যবহৃত ফোনগুলি দেয়া হয়, ইতিমধ্যেই নতুন ক্যামেরাফোন বাজারে রয়েছে যার টার্গেট বয়স ১০ বছরের কম বয়সী বাচ্চারা, ফেব্রুয়ারী, ২০০৭ সালে কেডিডিআই দ্বারা এ ক্যামেরাফোন চালু হয়। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র এই পরিসংখ্যানকেও অতিক্রম করে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে এ পর্যন্ত প্রায় অর্ধেক শিশুরই মোবাইল ফোন রয়েছে।[৩৭] অনেক তরুণ প্রাপ্তবয়স্কদের পরিবার ল্যান্ড-লাইন ফোন ব্যবহার করেছে। কিছু দেশে যেমন উত্তর কোরিয়ায় মোবাইল ফোন ব্যবহার নিষিদ্ধ করা হয়েছে এবং কিছু অন্যান্য দেশ যেমন বার্মায় এর ব্যবহারে বাধা দেয়া হয়।[৩৮]

মোবাইল ফোন পরিষেবার অনুপ্রবেশ সমাজকে উচ্চ স্তরে পৌঁছিয়েছে, এটি একে অপরের সাথে যোগাযোগ করার জন্য একটি প্রধান উপায়। এসএমএস সুবিধাটি তরুণ ব্যবহারকারীদের মধ্যে "টেক্সটিং" উপ-সংস্কৃতি তৈরি করেছে। ডিসেম্বর ১৯৯৩ সালে, প্রথম ব্যক্তি-থেকে- ব্যক্তি এসএমএস টেক্সট বার্তা ফিনল্যান্ডে প্রেরণ করা হয়। বর্তমানে, টেক্সটিং হল সবচেয়ে ব্যাপকভাবে ব্যবহার করা ডেটা পরিষেবা; ২০০৬ সালে ১.৮ বিলিয়ন ব্যবহারকারী (উত্স আইটিইউ) টেক্সটিং এ ৮০ বিলিয়ন ডলার আয় করেছে। অনেক ফোন সহজ সহজ টেক্সটিং, তাৎক্ষণিক বার্তা (ইন্সট্যান্ট মেসেজিং) সেবা প্রদান করে। মোবাইল ফোনের ইন্টারনেট পরিষেবা দ্বারা (যেমন এনটিটি ডোকোমো  এর আই-মোড), জাপান, দক্ষিণ কোরিয়া, চীন ও ভারতে ই-ম
ক্রমবর্ধমান দেশসমূহে, বিশেষত ইউরোপে, বর্তমানে মানুষের তুলনায় মোবাইল ফোনের সংখ্যা বেশী। ইউরোস্ট্যাট থেকে প্রাপ্ত পরিসংখ্যান অনুসারে, ইউরোপীয় ইউনিয়নের পরিসংখ্যান অফিসের তথ্যমতে লুক্সেমবার্গের প্রতি ১০০ জন লোকের মধ্যে ১৫৮ টি মোবাইল সাবস্ক্রিপশন রয়েছে যা ইউরোপে সর্বোচ্চ, এর পরের অবস্থান হচ্ছে যথাক্রমে লিথুয়ানিয়া এবং ইতালির।[১৫] হংকংয়ের জুলাই ২০০৭ সালে জনসংখ্যার হারের তুলনায় মোবাইল সাবস্ক্রিপশন ছিল ১৩৯.৮%।[১৬] ৫০ টিরও বেশি দেশে জনসংখ্যার তুলনায় মোবাইল ফোন সাবস্ক্রিপশন হার বেশী এবং পশ্চিম ইউরোপে ২০০৭ সালে এ হার ছিল গড়ে ১১০% (সোর্স ইনফরমা ২০০৭)। শিল্পোন্নত দেশগুলোর মধ্যে কানাডায় মোবাইল ফোন ব্যবহারের গড় হার সর্বনিম্ন এবং তা প্রায় ৫৮%।

২০০৭ সাল পর্যন্ত চীনে পাঁচশো মিলিয়ন সক্রিয় মোবাইল ফোন অ্যাকাউন্ট ছিল, কিন্তু জনসংখ্যার ভিত্তিতে এ হার শতকরা ৫০ শতাংশের ও নিচে।[১৭] ২০০৫ সালে বিশ্বের মোট মোবাইল ফোন গ্রাহক সংখ্যা ছিল ২.১৪ বিলিয়ন।[১৮] ২০০৭ সালের শেষ নাগাদ এ সংখ্যা ২.৭ বিলিয়ন মার্কিন ডলারে পৌঁছেছে। এবং নভেম্বর ২০০৭ সালে ছিল ৩.৩ বিলিয়ন[১৪]। এভাবে এই সংখ্যা পৃথিবী নামক গ্রহবাসীর মোট জনসংখ্যার অর্ধেকের সমাপরিমাণে পৌঁছেছে। ২০০৬ সালের হিসাবে বিশ্বের মোট জনসংখ্যার প্রায় ৮০% মোবাইল ফোনের কভারেজে প্রবেশ করেছে। ২০১০ সালের মধ্যে এই সংখ্যাটি ৯০% এ বাড়তে পারে।[১৯]

কিছু উন্নয়নশীল দেশে সামান্য কিছু "ল্যান্ডলাইন টেলিফোন" পরিকাঠামো এখনো রয়েছে, গত দশকে মোবাইল ফোনের ব্যবহার চতুর্দিক থেকেই বৃদ্ধি পেয়েছে।[২০] উন্নয়নশীল দেশগুলিতে মোবাইল ফোন প্রযুক্তির উত্থান প্রায়ই লিপফ্রগ প্রভাবের উদাহরণ হিসেবে উল্লেখ করা হয়। তৃতীয় বিশ্বের অনেক দূরবর্তী অঞ্চলগুলোতে স্যাটেলাইট ভিত্তিক যোগাযোগ ব্যবস্থা থাকার কারণে কোন টেলিযোগাযোগ পরিকাঠামো নেই। বর্তমানে, আফ্রিকায় বিশ্বের সবচেয়ে বেশি সেলুলার গ্রাহক রয়েছে,[২১] এশিয়ার বাজারগুলির প্রায় দ্বিগুণ[২২] গতিতে আফ্রিকার বাজার বৃদ্ধি পাচ্ছে। যেখানে গ্রাহক দীর্ঘমেয়াদী চুক্তির জন্য প্রতিশ্রুতিবদ্ধ নয় সেখানে প্রিপেইড বা 'পে-এজ-ইউ-গো' পরিষেবাগুলির প্রাপ্যতা আফ্রিকা ও অন্যান্য মহাদেশগুলিতে এই প্রবৃদ্ধির জন্য জ্বালানি যুগিয়েছে।

সংখ্যার ভিত্তিতে, ভারত বিশ্বের বৃহত্তম বিকাশমান বাজার যেখানে প্রতি মাসে প্রায় ৬ মিলিয়ন মোবাইল ফোন যোগ হয়।[২৩] বর্তমানে এখানে ৯৩৭.০৬ মিলিয়ন  মোবাইল ফোন গ্রাহক রয়েছে।[২৪]

ট্র্যাফিক সম্পাদনা
যেহেতু বিশ্ব দ্রুতই ৩জি এবং ৪জি নেটওয়ার্কের দিকে ঝুকছে, তাই ভিডিওর মাধ্যমে মোবাইল যোগাযোগ ব্যবস্থার উন্নয়ন হচ্ছে। আশা করা যাচ্ছে যে ২০১৮ এর শেষ নাগাদ, বিশ্বব্যাপী ট্র্যাফিক বছরে ১৯০ এক্সাবাইটে পৌছাবে। এটি হচ্ছে স্মার্টফোনে বদলে যাওয়া মানুষের একটি পরিসংখ্যান। ধারনা করা যায়, ২০১৮ সালের মধ্যে মোবাইল ট্র্যাফিক ১০ বিলিয়ন সংযোগে পৌঁছাবে এবং ৯৪% ট্র্যাফিক স্মার্টফোন, ল্যাপটপ এবং ট্যাবলেট থেকে আসবে। এছাড়াও ভিডিওগুলি থেকে ৬৯% মোবাইল ট্র্যাফিক আসবে কারণ বর্তমানে আমরা স্মার্ট ফোনে উচ্চতর ক্ষমতা সম্পন্ন পর্দা এবং ১৭৬ টি পরিধানযোগ্য ডিভাইস ব্যবহার করতে পারছি। স্পষ্টতই, ২০১৮ সালের মধ্যে ৪জি মোট মোবাইল ডেটার ৫১% ট্র্যাফিক করায়ত্ত করবে।[২৫]

সরকারি সংস্থা দ্বারা সম্পাদনা
আইন প্রয়োগ সম্পাদনা
আইন প্রয়োগকারী সংস্থা মোবাইল ফোনের প্রমাণ বিভিন্ন ভাবে ব্যবহার করেছে। একটি নির্দিষ্ট সময়ে একজন ব্যক্তির দৈহিক অবস্থানের প্রমাণ বিভিন্ন সেলফোন টাওয়ারগুলির মধ্যে ঐ ব্যক্তির সেলফোনকে ত্রিভূজীকরণ করে তোলার মাধ্যমে জানা যায়। এই ত্রিভূজীকরণ কৌশল কোন একজন ব্যক্তির সেলফোনের একটি নির্দিষ্ট সময়ে একটি নির্দিষ্ট অবস্থানে ছিল তা প্রদর্শন করতে ব্যবহার করা হয়। সন্ত্রাসবাদ ও প্রযুক্তির সন্ত্রাসবাদ সম্পর্কিত উদ্বেগের বিষয়গুলি ব্রিটিশ হাউস অব কমন্স এর হোম সেক্রেটারি কমিটির মোবাইল ফোনের ডিভাইস থেকে প্রমাণের ব্যবহার সম্পর্কিত একটি তদন্ত করে, এই এলাকার ফরেন্সিক কৌশলগুলি চিহ্নিত করার জন্য মোবাইল ফোন ফরেনসিক বিশেষজ্ঞের নেতৃস্থানীয়রায়া উদ্যোগ গ্রহণ করে।[২৬] এনআইএসটি  মোবাইল ফোনে উপস্থিত ডিজিটাল তথ্য সংরক্ষণ, অধিগ্রহণ, পরীক্ষা, বিশ্লেষণ এবং প্রতিবেদনের জন্য গাইডলাইন এবং পদ্ধতি প্রকাশ করেছে, যা এনআইএসটি প্রকাশন SP800-101 এর অধীনে পাওয়া যাবে।[২৭]

যুক্তরাজ্যে ২০০০ সালে দাবি করা হয়েছিল যে ওমেগ বোমা হামলার দিনে তৈরি মোবাইল ফোন কথোপকথনের রেকর্ডিং পুলিশ তদন্তের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ছিল। বিশেষ করে, দুটি মোবাইল ফোন কল যা আইরিশ সীমান্ত থেকযুক্তরাজ্যে ২০০০ সালে দাবি করা হয়েছিল যে ওমেগ বোমা হামলার দিনে তৈরি মোবাইল ফোন কথোপকথনের রেকর্ডিং পুলিশ তদন্তের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ছিল। বিশেষ করে, দুটি মোবাইল ফোন কল যা আইরিশ সীমান্ত থেকে ওমেগের দক্ষিণে করা হয়েছিল এবং বোমা হামলার দিনটিকে বিবেচনা করে গুরুত্বের সাথে ট্র্যাক করা হয়।[২৮]

মোবাইল ফোনের মাধ্যমে ফৌজদারী তদন্তের আরও উদাহরণ হচ্ছে, ২০০৪ সালের মাদ্রিদ ট্রেন বোমা হামলার প্রাথমিক অবস্থান এবং সন্ত্রাসীদের চূড়ান্ত সনাক্তকরণ। হামলার সময় মোবাইল ফোনেকে বোমা বিস্ফোরিত করার জন্য ব্যবহার করা হয়েছিল। তবে, একটি বোমাকে বিস্ফোরিত করতে তারা ব্যর্থ হয়েছিল, এবং সংশ্লিষ্ট মোবাইল ফোনের সিম কার্ডটি  তদন্তকারীদের সন্ত্রাসীদের সম্পর্কে প্রথম গুরুত্বপূর্ণ তথ্য দিয়েছিল। সিমকার্ডের ট্র্যাকিং এবং এই অঞ্চলে নিবন্ধিত অন্যান্য মোবাইল ফোনের সাথে যোগাযোগ করে, পুলিশ সন্ত্রাসীদের সনাক্ত করতে সমর্থ হয়েছিল।[২৯]

দূর্যোগ সাড়াদান সম্পাদনা
ফিনল্যান্ড সরকার ২০০৫ সালে সিদ্ধান্ত নেয় যে, বিপর্যয়ের সময় নাগরিকদের সতর্ক করার দ্রুততম উপায় হচ্ছে মোবাইল ফোন নেটওয়ার্ক। জাপানে, মোবাইল ফোন কোম্পানি তাদের গ্রাহকদের বিনামুল্যে ভূমিকম্প ও অন্যান্য প্রাকৃতিক বিপর্যয়ের অবিলম্বে সতর্কতা প্রদান করে[৩০]। একটি জরুরি পরিস্থিতিতে, দুর্যোগ প্রতিক্রিয়া কর্মীরা তাদের মোবাইল ফোনের সংকেত ব্যবহার করে ধ্বংসস্তূপে আটক বা আহত লোককে সনাক্ত করতে পারে। ফোনটি ইন্টারনেট  ব্রাউজারের মাধ্যমে তার বিপদ বা নিরাপত্তা সংক্রান্ত সংকেত কোম্পানিকে প্রেরণ করে। ফিনল্যান্ড  রেসকিউ সার্ভিসগুলিতে পরামর্শ দেওয়া হয়েছে যে, হাইকাররা জরুরী ক্ষেত্রে মোবাইল ফোন ব্যবহার করে এমনকি সেলুলার কভারেজের বাইরে কোন গভীর বনে থাকলেও উড্ডয়নরত বিমানে সেলফোনের বিশেষ রেডিও সংকেত সনাক্তকরণ গিয়ার দ্বারা একটি বেস স্টেশন সংযোগ করার চেষ্টা করে বিপদাপন্ন ব্যক্তিকে সনাক্ত করবে। এছাড়াও, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ব্যবহারকারীরা বিনামূল্য পাঠ্য বার্তার জন্য সাইন আপ করতে পারেন যাতে তাদের এলাকার একজন নিঁখোজ ব্যক্তির জন্য এম্বার (AMBER) সতর্কতা বের হয়।

যাইহোক, বেশিরভাগ মোবাইল ফোনের নেটওয়ার্ক স্বাভাবিক সময়ে এটির কার্যক্ষমতার কাছাকাছি মানের কাজ করে, এবং বৃহত্তর দুর্যোগকাল যখন সবারই যোগাযোগের প্রয়োজন হয় তখন সিস্টেম কার্যক্ষমতা হাড়িয়ে ফেলে। ২০০৭ সালের ১১ সেপ্টেম্বর, ২০০১ সালের পূর্বাঞ্চলীয় ব্লাউআউট, ২০০৫ সালের লন্ডন টিউব বোমা হামলা, হ্যারিকেন ক্যাটরিনা, সিডর, ২০০৬ সালে কিহোলো বে ভূমিকম্প  এবং ২০০৭ সালে মিনেসোটা সেতু দুর্ঘটনা- হচ্ছে এর উদাহরণ।

এফসিসি আইনের অধীনে, সিম কার্ডের উপস্থিতি অথবা অ্যাকাউন্টের অর্থ থাকুক আর না থাকুক অবস্থা নির্বিশেষে সকল মোবাইল টেলিফোনকে জরুরি ফোন নম্বরগুলিতে ডায়াল করতে সক্ষম হতে হবে।

সমাজের উপর প্রভাব সম্পাদনা

মানব স্বাস্থ্য সম্পাদনা
মোবাইল ফোন ব্যবহারের শুরু থেকেই সাধারণ মানুষ ও বিজ্ঞানীদের মধ্যে এর নিয়মিত ব্যবহার থেকে এর স্বাস্থ্যর উপর কার্যকর প্রভাব নিয়ে উদ্বেগ রয়ে গেছে। [৩১] কিন্তু ২০০৮ সাল পর্যন্ত আমেরিকান মোবাইল ফোন গুলো কলের চেয়ে টেক্সট বার্তা বেশী আদানপ্রদান করেছে। [৩২] ভেরিজন তাদের কিছু গ্রাহকের অনুরোধে নেটওয়ার্ক ব্যবহারে নিয়ন্ত্রন আরোপ করেছিলো। কারনটি ছিলো বাচ্চারা যাতে ঠিকমতো ঘুমোতে পারে। [৩২] এছাড়াও যানবাহন, ট্রেন, সিনেমাহলে ফোন ব্যবহার নিয়ন্ত্রণের উদ্যোগ নেয়া হয়েছিলো। একটি সমীক্ষা অনুসারে, ১৬ থেকে ৩০ বছর বয়সের ৪০ শতাংশ মানুষ গাড়ি চালানোর সময় টেক্সট করে। এবং অন্য একটি সমীক্ষামতে, ৪০ শতাংশ অল্পবয়সী না দেখেই টেক্সট করতে পারে। [৩২]

১৮ টি সমীক্ষা থেকে সেল ফোন ব্যবহার ও ব্রেইন ক্যান্সারের মধ্যে যোগসূত্র পাওয়া গেছে। এই গবেষণার একটি পর্যালোচনায় পাওয়া গেছে যে একাধারে ১০ বছর বা তারও বেশি সেল ফোন ব্যবহার "অ্যাকাউস্টিক নিউরোমা এবং গ্লিওমা'র ঝুঁকির একটি সুসংগত প্যাটার্ন তৈরি করে।"[৩৩] টিউমারগুলি বেশিরভাগ সময়ই মাথার পাশে পাওয়া যায় যার সাথে মোবাইল ফোন যোগাযোগের সম্পর্ক রয়েছে। ২০০৮  সালের জুলাইয়ে পিটাসবার্গ ক্যান্সার ইনস্টিটিউটের পরিচালক ড. রোনাল্ড হেরবারম্যান মোবাইল ফোনের বিকিরণ সম্পর্কে সতর্ক করে দিয়েছিলেন। তিনি বলেন যে, মোবাইল ফোনের ও মস্তিষ্কের টিউমারগুলির মধ্যে সংযোগের কোন সুনির্দিষ্ট প্রমাণ নেই, তবে পর্যাপ্ত গবেষণা থেকে বোঝা যায় যে মোবাইল ফোন ব্যবহারের সাবধানতা অবলম্বন করা উচিত।[৩৪] বিকিরণ পরিমাণ হ্রাস করতে হ্যান্ডসফ্রি ডিভাইস ব্যবহার করা যেতে পারে অথবা কলের বিকল্প হিসেবে টেক্সটিং করা যেতে পারে। গ্রামাঞ্চলে মোবাইল ফোন ব্যবহার সীমিত করা যেতে পারে। যে মোবাইল ফোনের টাওয়ারগুলি দূরে অবস্থিত সেগুলি থেকে উচ্চতর বিকিরণ উৎপন্ন হয়।[৩৫]

রয়টার্সের মতে, ব্রিটিশ অ্যাসোসরয়টার্সের মতে, ব্রিটিশ অ্যাসোসিয়েশন অব ডার্মাটোলজিস্টের মুখোপাধ্যায় মোবাইল ডিভাইসের বহির্ভাগে পাওয়া নিকেলপৃষ্ঠের এলার্জি প্রতিক্রিয়া দ্বারা মুখ ও গালে ফুসকুড়ি ওঠার ব্যাপারে সতর্ক করেছেন। এমনও একটি তত্ত্ব রয়েছে যে, এমন সমস্যা আঙ্গুলেও হতে পারে যদি কেউ মেটাল মেনু বোতামগুলি দিয়ে টেক্সট ম্যাসেজিংএ প্রচুর সময় ব্যয় করে। ২০০৮ সালে, প্রভিডেন্স, রোড আইল্যান্ডের ব্রাউন বিশ্ববিদ্যালয়ের লিয়োনেল বারকোভিচ এবং তার সহকর্মীরা আটটি ভিন্ন নির্মাতাদের কাছ থেকে ২২টি জনপ্রিয় হ্যান্ডসেট পরীক্ষা করে এবং এর মধ্যে ১৯ টি ডিভাইসে নিকেল পাওয়া যায়।[৩৬]

মানব আচরণ সম্পাদনা
সংস্কৃতি ও প্রথা সম্পাদনা

সেলুলার মোবাইল ফোন অবসর সময়ে যে কোনো জায়গা থেকে মানুষকে যোগাযোগের সুযোগ করে দেয়।
১৯৮০ থেকে ২০০০ এর মধ্যে, মোবাইল ফোন খুব মূল্যবান যন্ত্রে রূপান্তরিত হয়েছিল এবং সাধারণত অভিজাত ব্যবসায়ীরা ব্যবহার করত। এছাড়া সাধারণ ব্যবহারকারীরা ব্যক্তিগত যোগাযোগের জন্য ব্যবহার করত। বেশিরভাগ দেশে, স্থায়ী ল্যান্ডলাইন ফোনের সংখ্যাকে ছাড়িয়ে গেছে, ২০০৭ সালে যেখানে ল্যান্ডফোন ছিল ১.৩ বিলিয়ন সেখানে মোবাইল ফোন গ্রাহক সংখ্যা ছিল ৩.৩ বিলিয়ন।

জাপান ও দক্ষিণ কোরিয়া থেকে ইউরোপ, মায়ানমার, সিঙ্গাপুর, তাইওয়ান ও হংকংয়ের অনেক বাজারে ৮-৯ বছর বয়সীদের মধ্যে বেশিরভাগেরই মোবাইল ফোন রয়েছে এবং ৬-৭ বছর বয়সী গ্রাহকদের জন্য নতুন অ্যাকাউন্ট খোলা হয়। জাপানে প্রথমবারের মতো বাচ্চাদের ব্যবহৃত ফোনগুলি দেয়া হয়, ইতিমধ্যেই নতুন ক্যামেরাফোন বাজারে রয়েছে যার টার্গেট বয়স ১০ বছরের কম বয়সী বাচ্চারা, ফেব্রুয়ারী, ২০০৭ সালে কেডিডিআই দ্বারা এ ক্যামেরাফোন চালু হয়। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র এই পরিসংখ্যানকেও অতিক্রম করে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে এ পর্যন্ত প্রায় অর্ধেক শিশুরই মোবাইল ফোন রয়েছে।[৩৭] অনেক তরুণ প্রাপ্তবয়স্কদের পরিবার ল্যান্ড-লাইন ফোন ব্যবহার করেছে। কিছু দেশে যেমন উত্তর কোরিয়ায় মোবাইল ফোন ব্যবহার নিষিদ্ধ করা হয়েছে এবং কিছু অন্যান্য দেশ যেমন বার্মায় এর ব্যবহারে বাধা দেয়া হয়।[৩৮]

মোবাইল ফোন পরিষেবার অনুপ্রবেশ সমাজকে উচ্চ স্তরে পৌঁছিয়েছে, এটি একে অপরের সাথে যোগাযোগ করার জন্য একটি প্রধান উপায়। এসএমএস সুবিধাটি তরুণ ব্যবহারকারীদের মধ্যে "টেক্সটিং" উপ-সংস্কৃতি তৈরি করেছে। ডিসেম্বর ১৯৯৩ সালে, প্রথম ব্যক্তি-থেকে- ব্যক্তি এসএমএস টেক্সট বার্তা ফিনল্যান্ডে প্রেরণ করা হয়। বর্তমানে, টেক্সটিং হল সবচেয়ে ব্যাপকভাবে ব্যবহার করা ডেটা পরিষেবা; ২০০৬ সালে ১.৮ বিলিয়ন ব্যবহারকারী (উত্স আইটিইউ) টেক্সটিং এ ৮০ বিলিয়ন ডলার আয় করেছে। অনেক ফোন সহজ সহজ টেক্সটিং, তাৎক্ষণিক বার্তা (ইন্সট্যান্ট মেসেজিং) সেবা প্রদান করে। মোবাইল ফোনের ইন্টারনেট পরিষেবা দ্বারা (যেমন এনটিটি ডোকোমো  এর আই-মোড), জাপান, দক্ষিণ কোরিয়া, চীন ও ভারতে ই-মেইল এর মাধ্যমে পাঠ্য বার্তা পাঠানো যায়। বেশিরভাগ মোবাইল ইন্টারনেট অ্যাক্সেস কম্পিউটার ইন্টারনেট অ্যাক্সেসের থেকে অনেক আলাদা। সতর্কতা, আবহাওয়া তথ্য, ই-মেইল, সার্চ ইঞ্জিন, তাত্ক্ষণিক বার্তা, গেম এবং সংগীতের ডাউনলোডিং মোবাইল ইন্টারনেট এক্সেস দ্বারা দ্রুত এবং সংক্ষিপ্ত হয়।

প্রায়ই মোবাইল ফোনগুলি সার্বজনীনভাবে ব্যবহার করা হয়, মোবাইল ফোনের ব্যবহারের ক্ষেত্রে সামাজিক মানদন্ডগুলি একটি প্রধান ভূমিকা পালন করে বলে দেখানো হয়েছে।[৩৯] অধিকন্তু, এটি মোবাইল ফোনের মালিকের ফ্যাশন, মালিকের ব্যক্তিত্বের প্রতিফলন[৪০] এবং তাদের স্ব-পরিচয়ের অংশ হতে পারে।[৩৯] মোবাইল টেলিফোনি ব্যবসার এই দিকটি একটি শিল্প হিসেবে দাড়িয়েছে, যেমন ২০০৫ সালে ৩.৫ বিলিয়ন ডলারের রিংটোন বিক্রি হয়েছিলো।[৪১] উড়োজাহাজগুলিতে মোবাইল ফোন ব্যবহারের অনুমতি দেওয়া হচ্ছে। বিভিন্ন উড়োজাহাজ ইতিমধ্যে ফ্লাইটের সময় ফোন ব্যবহার করার অনুমতি প্রদান করছে। উড়োজাহাজগুলিতে এক সময় মোবাইল ফোন ব্যবহার নিষিদ্ধ ছিল এবং অনেকগুলি এয়ারলাইন এখনও তাদের ইন-প্ল্যান ঘোষণাগুলিতে দাবি করে যে এই নিষেধাজ্ঞা বিমানের রেডিও যোগাযোগগুলির সাথে সম্ভাব্য হস্তক্ষেপের কারণে। শাট-আপ মোবাইল ফোন উড়োজাহাজ এভিয়েশনের কর্মকান্ডে হস্তক্ষেপ করে না।

শিষ্টাচার সম্পাদনা
মোবাইল ফোন ব্যবহার সামাজিক অসম্মানের একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হতে পারে। যেমন: বিবাহের সময় বা অন্য কোনো গুরুত্বপূর্ণ সামাজিক অনুষ্ঠানের সময়, টয়লেটে, সিনেমা ও থিয়েটারে ফোন বেজে ওঠা। কিছু বইয়ের দোকান, লাইব্রেরী, বাথরুমে, সিনেমায়, ডাক্তারের অফিস এবং প্রার্থনার স্থানে ফোন ব্যবহার নিষিদ্ধ, যাতে অন্যান্য পৃষ্ঠপোষকগণ কথোপকথন দ্বারা বিরক্ত না হয়। কিছু প্রতিষ্ঠান এর ব্যবহার প্রতিরোধের জন্য সংকেত-জ্যামিং সরঞ্জাম স্থাপন করছে, যদিও মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রসহ অনেক দেশে এই সরঞ্জামগুলি অবৈধ।

অনেক মার্কিন শহরের ভূগর্ভসশিষ্টাচার সম্পাদনা
মোবাইল ফোন ব্যবহার সামাজিক অসম্মানের একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হতে পারে। যেমন: বিবাহের সময় বা অন্য কোনো গুরুত্বপূর্ণ সামাজিক অনুষ্ঠানের সময়, টয়লেটে, সিনেমা ও থিয়েটারে ফোন বেজে ওঠা। কিছু বইয়ের দোকান, লাইব্রেরী, বাথরুমে, সিনেমায়, ডাক্তারের অফিস এবং প্রার্থনার স্থানে ফোন ব্যবহার নিষিদ্ধ, যাতে অন্যান্য পৃষ্ঠপোষকগণ কথোপকথন দ্বারা বিরক্ত না হয়। কিছু প্রতিষ্ঠান এর ব্যবহার প্রতিরোধের জন্য সংকেত-জ্যামিং সরঞ্জাম স্থাপন করছে, যদিও মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রসহ অনেক দেশে এই সরঞ্জামগুলি অবৈধ।

অনেক মার্কিন শহরের ভূগর্ভস্থ ট্রানজিট সিস্টেমের ভূগর্ভস্থ অংশগুলিতে তাদের রাইডার্সের জন্য মোবাইল ফোন ব্যবহার নিষিদ্ধ করা হয়েছে বিশেষ করে লম্বা দূরত্বের ট্রেনগুলোতে। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে এবং ইউরোপ ও কানাডায় বেশিরভাগ স্কুলে ক্লাস চলাকালীন সময়ে মোবাইল ফোন ব্যবহার সীমাবদ্ধ করার জন্য শ্রেণীকক্ষ অথবা স্কুলে মোবাইল ফোনের নিষেধাজ্ঞা রয়েছে।

ফিনিশ টেলিফোন কোম্পানি, পাবলিক ট্রান্সপোর্ট অপারেটর এবং যোগাযোগ কর্তৃপক্ষের গঠিত একটি কর্মী গ্রুপ, মোবাইল ফোন ব্যবহারকারীদের সৌজন্যবোধ শেখানোর জন্য একটি প্রচারাভিযান শুরু করেছে, বিশেষ করে গণ পরিবহন ব্যবহার করার সময় ফোনে কীভাবে কথা বলতে হয়! বিশেষ করে, এ প্রচারাভিযান উচ্চস্বরে মোবাইল ফোনে কথোপকথনকারীদের নিবৃত্ত করতে চায়।[৪২]

গাড়ি চালনার সময় ব্যবহার সম্পাদনা
গাড়ি চালকদের দ্বারা মোবাইল ফোনের ব্যবহার ক্রমবর্ধমানভাবে সাধারণ হয়ে উঠেছে। উদাহরণস্বরূপ তাদের কাজের অংশ হিসাবে, যেমন পণ্য ডেলিভারি প্রদানকারী ড্রাইভাররা ক্লায়েন্টকে মোবাইল ফোনে আহ্বান করে। আবার সামাজিকভাবে যারা বন্ধুদের সাথে চ্যাট করছেন তারাও এর অন্তর্ভুক্ত। অনেক ড্রাইভার ড্রাইভিং করার সময় তাদের সেলফোন ব্যবহার করার সুবিধা গ্রহণ করেছেন, তবে কিছু বিচারব্যবস্থা বা আইন, যেমন অস্ট্রেলিয়া, কানাডিয়ান প্রাদেশিক ব্রিটিশ কলাম্বিয়া, কেবেক, অন্টারিও, নোভা স্কোশিয়া এবং নিউফাউন্ডল্যান্ড ও লাব্রাডরের  পাশাপাশি যুক্তরাজ্য, স্কটল্যান্ড একটি জিরো-টলারেন্স নীতি অনুশীলন করে। এছাড়া ইংল্যান্ড, ওয়েলস এবং নর্দার্ন আয়ারল্যান্ড একটি সতর্কতা ব্যবস্থা পরিচালনা করছে। এসব দেশের বিচার বিভাগের কর্মকর্তারা যুক্তি দেখান যে ড্রাইভিং করার সময় মোবাইল ফোনের ব্যবহার করে যানবাহন অপারেশনকে বাধা দেয় যা সড়ক ট্রাফিক দুর্ঘটনার ঝুঁকি বাড়িয়ে তুলতে পারে।

একটি গবেষণায় গাড়ি চালানোর সময় মোবাইল ফোনে কথা বলার বিভিন্ন আপেক্ষিক ঝুঁকি (আরআর) পাওয়া গেছে। কেস-ক্রসওভার বিশ্লেষণের মাধ্যমে দুটি আলাদা আলাদা অধ্যয়ন ৪ এ,[৪৩][৪৪] একটি মহামারীসংক্রান্ত যৌথ গবেষণায় দেখা যায় যে, ক্র্যাশ-ঝুঁকি এক্সপোজার পুরুষদের ১.১১ এবং মহিলাদের জন্য ১.২১ হারে নিয়ন্ত্রিত হয়।[৪৫]

উটাহ বিশ্ববিদ্যালয়ের একটি সিমুলেশন গবেষণায় প্রফেসর ডেভিড স্ট্রায়ার মোবাইল ফোনে কথোপকথনরত একজন ড্রাইভারের সাথে রক্তে ০.০৮% অ্যালকোহল মিশ্রিত একজন মানুষের তুলনা করেছেন। গবেষণায় তিনি দেখিয়েছেন যে, কঠিন পরিস্থিতিতে গাড়ি চালনার সময় একজন মোবাইল ফোন ব্যবহারকারীর চেয়ে একজন মাদক গ্রহণকারী ভালোভাবে নিয়ন্ত্রণ করতে পারে।[৪৬] কানাডিয়ান অটোমোবাইল এসোসিয়েশন[৪৭] এবং ইলিনয়েস বিশ্ববিদ্যালয়ের[৪৮] মেটা-বিশ্লেষণে দেখা গেছে যে হ্যান্ড-ফ্রী এবং হ্যান্ড-ফীড উভয় ফোনই ব্যবহার করার সময় প্রতিক্রিয়া সময় ছিল স্বাভাবিক ড্রাইভিংয়ের তুলনায় প্রায় ৫২ টি স্ট্যান্ডার্ড ডিভিয়েশন (অর্থাৎ, একজন সাধারণ ড্রাইভার, একটি সেল ফোনে কথা বলার সময় প্রতিক্রিয়া সময় প্রায় ৪০ শতাংশ থাকে)

ক্রস ওভার স্টাডি[৪৪][৪৩] এপিডেমিওলজিক্যাল অধ্যয়ন,[৪৫] সিমুলেশন অধ্যয়ন,[৪৬] এবং মেটা-বিশ্লেষণ[৪৭][৪৮] অনুসারে, গাড়ি চালানোর সময় একটি হ্যান্ড-ফ্রী ডিভাইস, হ্যান্ড হেল্ড ডিভাইসের চেয়ে নিরাপদ নয়।।এমনকি এই তথ্যের ভিত্তিতে, ক্যালিফোর্নিয়ার নতুন ওয়্যারলেস কমিউনিকেশনস ডিভাইস আইন (কার্যকর ১ জানুয়ারী, ২০০৯) তৈরি হয় এবং এটি ইলেক্ট্রনিক বেতার যোগাযোগ যন্ত্র যেমন পাঠ্য-ভিত্তিক যোগাযোগ, গাড়ি চালানোর সময় সেল ফোন ব্যবহার ইত্যাদি নিয়ন্ত্রণ ও নিয়ম-কানুন লঙ্ঘন থেকে বিরত রাখে। বেতার টেলিফোন ব্যবহারের সাথে জড়িত দুটি অতিরিক্ত আইন ১ জুলাই, ২০০৮ কার্যকর হয়। প্রথম আইনটি হচ্ছে, কোনো মোটর গাড়ির চালনার সময় হ্যান্ডহেল্ড ওয়্যারলেস টেলিফোন ব্যবহার সব ড্রাইভারের জন্য নিষিদ্ধ। আইন প্রয়োগকারী সংস্থা, মেডিকেল সরঞ্জাম সরবরাহকারী, ফায়ার বিভাগ, বা অন্য কোন জরুরি সংস্থার এজেন্সির জরুরী কল করতে একজন ড্রাইভার একটি বেতার টেলিফোন ব্যবহার করতে পারবেন। প্রথম অপরাধের জন্য প্রাথমিক জরিমানা ২০ ডলার এবং পরবর্তী অপরাধের জন্য ৫০ ডলার। জরিমানা অপরাধ মূল্যায়ন করে, জরিমানার পরিমাণ তিন গুণ পর্যন্ত হতে মেটা-বিশ্লেষণে দেখা গেছে যে হ্যান্ড-ফ্রী এবং হ্যান্ড-ফীড উভয় ফোনই ব্যবহার করার সময় প্রতিক্রিয়া সময় ছিল স্বাভাবিক ড্রাইভিংয়ের তুলনায় প্রায় ৫২ টি স্ট্যান্ডার্ড ডিভিয়েশন (অর্থাৎ, একজন সাধারণ ড্রাইভার, একটি সেল ফোনে কথা বলার সময় প্রতিক্রিয়া সময় প্রায় ৪০ শতাংশ থাকে)

ক্রস ওভার স্টাডি[৪৪][৪৩] এপিডেমিওলজিক্যাল অধ্যয়ন,[৪৫] সিমুলেশন অধ্যয়ন,[৪৬] এবং মেটা-বিশ্লেষণ[৪৭][৪৮] অনুসারে, গাড়ি চালানোর সময় একটি হ্যান্ড-ফ্রী ডিভাইস, হ্যান্ড হেল্ড ডিভাইসের চেয়ে নিরাপদ নয়।।এমনকি এই তথ্যের ভিত্তিতে, ক্যালিফোর্নিয়ার নতুন ওয়্যারলেস কমিউনিকেশনস ডিভাইস আইন (কার্যকর ১ জানুয়ারী, ২০০৯) তৈরি হয় এবং এটি ইলেক্ট্রনিক বেতার যোগাযোগ যন্ত্র যেমন পাঠ্য-ভিত্তিক যোগাযোগ, গাড়ি চালানোর সময় সেল ফোন ব্যবহার ইত্যাদি নিয়ন্ত্রণ ও নিয়ম-কানুন লঙ্ঘন থেকে বিরত রাখে। বেতার টেলিফোন ব্যবহারের সাথে জড়িত দুটি অতিরিক্ত আইন ১ জুলাই, ২০০৮ কার্যকর হয়। প্রথম আইনটি হচ্ছে, কোনো মোটর গাড়ির চালনার সময় হ্যান্ডহেল্ড ওয়্যারলেস টেলিফোন ব্যবহার সব ড্রাইভারের জন্য নিষিদ্ধ। আইন প্রয়োগকারী সংস্থা, মেডিকেল সরঞ্জাম সরবরাহকারী, ফায়ার বিভাগ, বা অন্য কোন জরুরি সংস্থার এজেন্সির জরুরী কল করতে একজন ড্রাইভার একটি বেতার টেলিফোন ব্যবহার করতে পারবেন। প্রথম অপরাধের জন্য প্রাথমিক জরিমানা ২০ ডলার এবং পরবর্তী অপরাধের জন্য ৫০ ডলার। জরিমানা অপরাধ মূল্যায়ন করে, জরিমানার পরিমাণ তিন গুণ পর্যন্ত হতে পারে।[৪৯] ২০০৮ সালের ১ জুলাই কার্যকর দ্বিতীয় আইনটি কোনো মোটর গাড়ি (ক্যালিফোর্নিয়া গাড়ি চালনা বিধি [VC]$123124) চালানোর সময় ১৮ বছরের কম বয়সীদের জন্য বেতার টেলিফোন বা হ্যান্ড-ফ্রী ডিভাইস ব্যবহার নিষিদ্ধ করে। হ্যান্ডস-ফ্রি এবং হ্যান্ডহেল্ড ফোন ব্যবহারে ৩০ টিরও বেশি দেশে আইন রয়েছে যা হ্যান্ডহেল্ড ফোন ব্যবহার নিষিদ্ধ করে কিন্তু হ্যান্ডস-ফ্রি ব্যবহারের অনুমতি দেয়। নটিংহ্যাম বিশ্ববিদ্যালয়ের অ্যাক্সিডেন্ট রিসার্চ ইউনিটের বৈজ্ঞানিক সাহিত্য অনুসারে ফোনে কথা বলা এবং যাত্রীদের সাথে কথা বলার মধ্যে ঝুকি নির্ধারণে দেখা যায় ফোনে কথা বলার সময় মানুষ দ্রুত কথা বলে।[৫০] কিন্তু ইলিনয় বিশ্ববিদ্যালয়ের মেটা- বিশ্লেষণে দেখা যায় ফোনে কথা বলার চেয়ে যাত্রীদের সাথে কথা বলা বেশী ঝুঁকিপূর্ণ।[৪৮]

বিমানে ব্যবহার সম্পাদনা
২০০৭ সাল নাগাদ বিমানের বেস স্টেশনের সাথে সংযুক্ত থাকার জন্য কম বিদ্যুৎসম্পন্ন এবং স্বল্প পরিসরের সংযোগের অনুমতি দিয়ে বিভিন্ন বিমান সংস্থা বেস স্টেশন এবং অ্যান্টেনা সিস্টেম পরীক্ষামূলকভাবে বিমানে ব্যবহার করে।[৫১] কিন্তু, তারা উউড্ডয়মান অবস্থায় এবং ল্যান্ডিং করার সময়ভূমিতে অবস্থানরত স্টেশনগুলোর সাথে সংযোগ স্থাপনের চেষ্টা করতে পারবে না।[তথ্যসূত্র প্রয়োজন] একইভাবে, এয়ারলাইনসগুলো ভ্রমণের সময় তাদের যাত্রীদের জন্য পুরো ভয়েস এবং ডেটা পরিষেবাগুলিতে ফোন সেবা প্রদান করতে পারে, অথবা প্রাথমিকভাবে শুধুমাত্র এসএমএস টেক্সট মেসেজিং দেয়। এমিরেটস কিছু ফ্লাইটে সীমিত মোবাইল ফোন ব্যবহারের অনুমতি দেওয়ার পরিকল্পনা ঘোষণা করেছে।[তথ্যসূত্র প্রয়োজন] তবে, অতীতে, বাণিজ্যিক বিমান সংস্থাগুলি সেল ফোন এবং ল্যাপটপ ব্যবহার নিষিদ্ধ করেছে, এই দাবির কারণে যে এই ডিভাইসগুলি থেকে বেরিয়ে আসা ফ্রিকোয়েন্সিগুলি বিমানের রেডিও তরঙ্গের যোগাযোগ ভেঙ্গে ফেলতে পারে।

২০ মার্চ, ২০০৮ তারিখে, একটি এমিরেটস ফ্লাইট প্রথমবারের মত বাণিজ্যিক বিমানের ফ্লাইটে ভয়েস কলের অনুমোদন দিয়েছে। ইউরোপীয় এভিয়েশন সেফটি এজেন্সি (ইএএসএ) এবং সংযুক্ত আরব আমিরাত-ভিত্তিক জেনারেল সিভিল এভিয়েশন অথরিটি (জিসিএএ) এমিরেটসকে এরিওমোবাইল সিস্টেমের ব্যবহারের জন্য পূর্ণ অনুমোদন প্রদানের পর এই সাফল্যটি এসেছে। যাত্রীরা ভয়েস কলগুলি প্রেরণ এবং গ্রহণ করতে এবং পাশাপাশি পাঠ্য বার্তা ব্যবহার করতে সক্ষম। এয়ারবাস A340-300 এ ব্যবহারের পর থেকে স্বয়ংক্রিয়ভাবে এ প্রযুক্তি ব্যবহৃত হয়ে আসছিল। পরিষেবাটি ব্যবহার করতে চাইলে যাত্রীরা প্রথমবারের মতো তারা তাদের ফোনটি চালু করার সময় এরিওমোবাইল সিস্টেমে একটি টেক্সট ম্যাসেজ পাঠায়। ইএসএএ কর্তৃক অনুমোদন করা হয়েছে যে জিএসএম ফোনগুলি এ্যারোপ্লেনে ব্যবহারের জন্য নিরাপদ, কারণ এরিওমোবাইল সিস্টেমটি "সংবেদনশীল" বলে বিবেচিত বিমান উপাদানগুলির পরিবর্তন প্রয়োজন হয় না এবং সংশোধিত ফোনের ব্যবহারের প্রয়োজনও নেই।

যে কোনও ক্ষেত্রে, বিভিন্ন এয়ারলাইন্স কর্তৃক অনুমোদিত বিভিন্ন প্রথা এবং এমনকি বিভিন্ন দেশে একই বিমান কর্তৃপক্ষের মধ্যে এর ব্যবহারে অসঙ্গতি রয়েছে। উদাহরণস্বরূপ, ডেল্টা এয়ার লাইন মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের অভ্যন্তরীণ ফ্লাইটে অবতরণ করার পর অবিলম্বে মোবাইল ফোনের ব্যবহারের অনুমতি প্রদান করতে পারে, তবে তারা নেদারল্যান্ডের একটি আন্তর্জাতিক ফ্লাইটে "কোনও ক্ষেত্রে, বিভিন্ন এয়ারলাইন্স কর্তৃক অনুমোদিত বিভিন্ন প্রথা এবং এমনকি বিভিন্ন দেশে একই বিমান কর্তৃপক্ষের মধ্যে এর ব্যবহারে অসঙ্গতি রয়েছে। উদাহরণস্বরূপ, ডেল্টা এয়ার লাইন মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের অভ্যন্তরীণ ফ্লাইটে অবতরণ করার পর অবিলম্বে মোবাইল ফোনের ব্যবহারের অনুমতি প্রদান করতে পারে, তবে তারা নেদারল্যান্ডের একটি আন্তর্জাতিক ফ্লাইটে "দরজা না খোলা পর্যন্ত" ব্যবহারের অনুমতি দিবে না। এপ্রিল ২০০৭ এ যুক্তরাষ্ট্রের ফেডারেল কমিউনিকেশন কমিশন ফ্লাইটের সময় যাত্রীদের 'সেল ফোনের ব্যবহার' নিষিদ্ধ করেছিল।[৫২]

অনুরূপভাবে, সম্ভাব্য নিরাপত্তামূলক সমস্যাগুলির কারণে পেট্রোল স্টেশনে মোবাইল ফোনের ব্যবহার নিষিদ্ধ করার ক্ষেত্রে অনেকগুলি দেশ যেমন কানাডা, ইউকে এবং মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র আগ্রহী হয়েছে।[তথ্যসূত্র প্রয়োজন] তবে এটি অসম্ভাব্য যে মোবাইল ফোন ব্যবহারে যে কোনো সমস্যা হতে পারে,[৫৩] এবং প্রকৃতপক্ষে "পেট্রোল স্টেশনের কর্মচারীরা নিজেরাই এসমস্ত ঘটনা সম্পর্কে গুজব ছড়িয়ে দিচ্ছে।"

পরিবেশগত প্রভাব সম্পাদনা

গাছের মতো দেখতে একটি সেলুলার অ্যান্টেনা
সকল সুউচ্চ স্থাপনার গুলোর মতো সেলুলার অ্যান্টেনা গুলো অবশ্যই কম উচ্চতায় উড্ডয়নরত বিমানগুলোর ক্ষেত্রে ঝুঁকিপূর্ণ হতে পারে। বিমানবন্দর বা হেলিকপ্টারের হেলিপোর্টের কাছাকাছি একটি নির্দিষ্ট উচ্চতার টাওয়ারগুলির উপর সতর্কতা লাইট থাকতে হবে। রিপোর্ট আছে যে সেলুলার মাস্টস, টিভি টাওয়ার এবং অন্যান্য উচ্চ কাঠামো উপর সতর্কতা লাইট দ্বার পাখি আকৃষ্ট এবং বিভ্রান্ত হতে পারে। মার্কিন কর্তৃপক্ষ হিসেব করে যে প্রতি বছর দেশটিতে যোগাযোগের টাওয়ারের কাছাকাছি লক্ষ লক্ষ পাখি মারা যায়।[৫৪]

কিছু সেলুলার অ্যান্টেনা টাওয়ার দুর্যোগের সময় দেখার জন্য অস্পষ্ট হয়ে যায় এবং এগুলিকে একটি গাছের মতো মনে হয়।

একটি গবেষণা থেকে সিসিডি (কলোনি কলাপ্সড ডিসঅর্ডার) এর সাথে মোবাইল নেটওয়ার্কের সম্পর্ক খুজে পাওয়া গেছে। একটি স্বাধীন সংবাদপত্রে বৈজ্ঞানিক গবেষণা উদ্ধৃত করে দাবি করা হয়েছে যে, এমন তত্ত্বের প্রমাণ পাওয়া গেছে যে মৌমাছিদের  নিজস্ব প্রতিরক্ষা ব্যবস্থার উপর দ্রুত এবং বিপর্যয়মূলক প্রভাব দেখা দিছে এবং নিয়ন্ত্রিত পরীক্ষায় মৌমাছি জনসংখ্যা পতনের একটি প্রধান কারণ মোবাইল ফোন মাস্টস।[৫৫] প্রকৃতপক্ষে মোবাইল ফোন গবেষণার মূল বিষয়বস্তু ছিল না এবং মূল গবেষকেরা তাদের গবেষণায়, মোবাইল ফোন এবং সিসিডিয়ের মধ্যে যেকোনো সংযোগকে নিবিড়ভাবে অস্বীকার করেছেন, বিশেষ করে ইন্টিগ্রেটেড নিবন্ধটি তাদের ফলাফলের ভুল ব্যাখ্যা দিয়েছে এবং "একটি ভয়াবহ গল্প" তৈরি করেছে।[৫৬][৫৭] মৌমাছিদের ক্ষতির প্রাথমিক দাবি যখন ব্যাপকভাবে রিপোর্ট করা হয়,তখন আসল গল্পটি মিডিয়াতে প্রায় অস্তিত্বহীন ছিল।

মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে ৫০০ মিলিয়নেরও বেশি ব্যবহৃত সেলফোন শেলভ বা ল্যান্ডফিলের অব্যবহৃত বসে আছে,[৫৮] এবং এটি অনুমান করা হয় যে এই বছরে ১২৫ মিলিয়নেরও বেশি এই বছরেই বাদ দেওয়া হবে। তবে কয়েকটি কোম্পানি ব্যবহারকারীদের কাছ থেকে মোবাইল ফোনের রিসাইকেল প্রদানের প্রস্তাব দিয়েছে। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে অনেক অবাঞ্ছিত কিন্তু ব্যবহারযোগ্য মোবাইল ফোন জরুরী যোগাযোগের জন্য মহিলাদের আশ্রয়ণ প্রকল্পে দান করা হয়।শুল্ক মডেল সমূহ সম্পাদনা


উগান্ডার একটি মোবাইল দোকান
মূল্য পরিশোধ পদ্ধতি সম্পাদনা
মোবাইল টেলিফোনির জন্য অর্থ প্রদানের দুটি প্রধান উপায় রয়েছে: একটি 'পে-এজ-ইউ-গো' মডেল, যেখানে 'কথোপকথন সময়' (টক টাইম) ক্রয় করা হয় এবং ইন্টারনেট একাউন্টের মাধ্যমে অথবা দোকান বা এটিএমগুলোর মাধ্যমে, বা কোনো একটি সুনির্দিষ্ট চুক্তি মডেলের মাধ্যমে একটি ফোন ইউনিটে এ টক-টাইম যোগ করা হয়। এই পদ্ধতি একজন ভোক্তার একটি মৌলিক প্যাকেজ এবং অন্যান্য পরিষেবা ক্রয় করার জন্য ক্রমবর্ধমান একটি জনপ্রিয় পদ্ধতি।

পর্তুগাল ও ইতালিতে প্রায় একইসাথে উদ্ভাবন করা হয় পে-এজ-ইউ-গো (বর্তমানে "প্রাক-পে" অথবা "প্রিপেইড" নামেও পরিচিত) এবং এখন পর্যন্ত মোট মোবাইল ফোন গ্রাহকদের অর্ধেকের চেয়ে বেশি এ পদ্ধতি ব্যবহার করে। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র, কানাডা, কোস্টা রিকা, জাপান, ইসরায়েল এবং ফিনল্যান্ড হচ্ছে এমন কিছু বিরল দেশ যেখানে বেশিরভাগ ফোন এখনও চুক্তি-ভিত্তিক।

ইনকামিং কল চার্জ সম্পাদনা
মোবাইল টেলিফোনের প্রারম্ভিক দিনগুলিতে অপারেটরগুলো মোবাইল ফোনে ব্যবহারকারী দ্বারা ব্যবহৃত সকল এয়ার-টাইমের জন্য চার্জ করত, যার মধ্যে বহির্মুখী ও আগত উভয় টেলিফোন কল রয়েছে। মোবাইল ফোন ব্যবহারের হার বৃদ্ধি পাওয়ায়, অপারেটরদের মধ্যে প্রতিযোগিতা বাড়ে যার ফলশ্রুতিতে কিছু কিছু অপারেটর ইনকামিং কলগুলির জন্য চার্জ না করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে।

ইউরোপীয় বাজার পুরো জিএসএম পরিবেশ জুড়ে একটি 'কলিং পার্টি মডেল' চালু করে এবং শীঘ্রই অন্যান্য জিএসএম বাজার এই মডেল অনুকরণ শুরু করে।

হংকং, সিঙ্গাপুর, কানাডা এবং মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে, প্রাপ্ত কলের জন্য প্রতি মিনিটে চার্জ গ্রহণ করা হয়। যদিও, কয়েকটি অপারেটর কোনো চার্জ ছাড়াই আনলিমিটেড কল গ্রহণের সুবিধা চালু করেছে। এটি "রিসিভিং পার্টি পেইজ" মডেল নামে পরিচিত। জানা যায় যে, চীনে ২০০৭ সালের জানুয়ারি থেকে তাদের দুই অপারেটরের উভয়ই 'কলার-পে' পদ্ধতিতে গ্রহণ করবে। [৫৯]

রিসিভিং পার্টি পে সিস্টেমের অসুবিধা হল যে, ফোন মালিকরা তাদের ফোনে অবাঞ্ছিত কল গ্রহণ এড়াতে বন্ধ করে রাখে, যা কলিং পার্টিতে মোট ভয়েস ব্যবহারের হারের এবং মুনাফা অর্জনের উপর প্রভাব পড়ে। [৬০] ব্যবহারকারীদের তাদের ফোন বন্ধ করে দেওয়া থেকে বিরত রাখার জন্য, অধিকাংশ অপারেটর তাদের সেবা রিসিভিং পার্টি পেইজ থেকে কলিং পার্টি পেইজে রূপান্তর করেছে অথবা কোনো কোনো গ্রাহক তাদের গ্রাহকদের সহনশীলতার জন্য মাসিক মিনিট প্রদানসহ বিভিন্ন ক্ষতিপূরণ দিচ্ছে।

উল্লেখ্য, যখন অন্য কোনও দেশে ব্যবহারকারীর রোমিং হয়, তখন গৃহীত মডেলের স্বীকৃত সকল কলগুলোয় আন্তর্জাতিক রোমিং ট্যারিফ প্রয়োগ করা হয়। [৬১]

Comments

Popular posts from this blog

পাথরকুচি পাতার উপকারিতা(patharkuchi Patti ka upkar)

রামায়ণ(RAMAYAN)full story of bengali

সুনামি সৃষ্টির কারণ