নিউটনের গতিসূত্রসমূহ-sir aaijack neuton

                             নিউটনের গতিসূত্রসমূহ

আইজাক নিউটনের গতিসূত্রগুলো হল প্রকৃতির তিনটি নিয়ম, যা চিরায়ত বলবিদ্যার ভিত্তি স্বরূপ। এই নিয়মগুলো বস্তুর উপর প্রযুক্ত বল এবং তার দরূন সৃষ্ট গতির মধ্যে সম্পর্ক বর্ণনা করে। প্রায় তিন শতাব্দির বেশি সময় ধরে এই নিয়মগুলো নানাভাবে প্রকাশিত হয়ে আসছে। [১] সূত্র তিনটি হল:

প্রথম সূত্র: বাইরে থেকে কোন বল প্রয়োগ না করলে স্থির বস্তু স্থির এবং গতিশীল বস্তু সুষম গতিতে সরল পথে চলতে থাকে। [২][৩][৪]
চিরায়ত বলবিদ্যা
{\displaystyle \mathbf {F} ={\frac {\mathrm {d} }{\mathrm {d} t}}(m\mathbf {v} )}
নিউটনের দ্বিতীয় সূত্র
চিরায়ত বলবিদ্যার ইতিহাস
শাখাসমূহ
স্থিতিবিদ্যা · বিশ্লেষণমূলক গতিবিদ্যা / গতিবিদ্যা · ফলিত বলবিদ্যা · মহাজাগতিক বলবিদ্যা · প্রবাহী বলবিদ্যা · কঠিন পদার্থের বলবিদ্যা · পরিসংখ্যানিক বলবিদ্যা
গঠনসমূহ
নিউটনীয় বলবিদ্যা
ল্যাগর‍্যংগিয়ান বলবিদ্যা
হ্যামিল্টনীয় বলবিদ্যা
মৌলিক ধারণাসমূহ
স্থান · কাল · সরণ · বেগ · দ্রুতি · ভর · ত্বরণ · মহাকর্ষ · বল · টর্ক  · যুগল ·
ভরবেগ · কৌণিক ভরবেগ · জড়তা · জড়তার ভ্রামক · প্রসঙ্গ কাঠামো · শক্তি · গতিশক্তি · বিভব শক্তি · কাজ ·
প্রধান বিষয়বস্তু
দৃঢ় বস্তু · দৃঢ় বস্তুর গতিবিদ্য · গতি · নিউটনের গতিসূত্রসমূহ · নিউটনের মহাকর্ষ সূত্র · গতির সমীকরণসমূহ · জড় প্রসঙ্গ কাঠামো · অ-স্থির প্রসঙ্গ কাঠামো · ঘূর্নায়মান প্রসঙ্গ কাঠামো · ঘর্ষন বল · আপেক্ষিক বেগ · ঘর্ষন · সরল ছন্দিত স্পন্দন · ছন্দিত স্পন্দক · কম্পন · আরোপিত কম্পন · আরোপন অনুপাত · ঘুর্নন গতি · অভিন্ন চক্রাকার গতি · বিচ্ছিন্ন চক্রাকার গতি · কেন্দ্রাভিমুখী বল · কেন্দ্রাতিগ বল · ঘূর্নায়মান প্রসঙ্গ কাঠামোতে কেন্দ্রাতিগ বল · প্রতিক্রিয়াশীল কেন্দ্রাতিগ বল · কোরিয়োলি ক্রিয়া · দোলক · ঘূর্নন দ্রুতি · কৌণিক ত্বরন · কৌণিক বেগ · কৌণিক কম্পাংক · কৌণিক সরণ
বিজ্ঞানীগণ
আইজাক নিউটন · জেরেমিয়াহ হরক্স · লিওনার্ট অয়লার · জ্যাঁ লি রোঁ ডি আলেমবারট · আলেক্সিস ক্ল্যায়ারট · জোসেপ লুই ল্যাগর‍্যংগ · পিয়ের সিমোঁ লাপ্লাস · উইলিয়াম রোয়ান হ্যামিল্টন · সিমোঁ-ডেনিস পঁয়সন
এই বাক্সটি: দেখুনসম্পাদনা

১৬৮৭ সালে সম্পাদিত এবং লাতিন ভাষায় প্রকাশিত বই Philosophiæ Naturalis Principia Mathematica -এ নিউটনের প্রথম ও দ্বিতীয় গতিসূত্র।
সুতরাং, কোন বস্তুর উপর নিট(total) বলের পরিমাণ শূন্য হলে, বস্তুর ভরকেন্দ্র হয় স্থির নয়তো সমবেগে গতিশীল থাকবে।

দ্বিতীয় সূত্র: কোন বস্তুর ভরবেগের পরিবর্তনের হার প্রযুক্ত বলের সমানুপাতিক এবং বল যে দিকে ক্রিয়া করে বস্তুর ভরবেগের পরিবর্তন সেদিকেই ঘটে।
অর্থাৎ কোনো বস্তুর ভর যদি অপরিবর্তিত থাকে,তবে বস্তুটির ওপর প্রযুুক্ত বাহ্যিক নেট বল বস্তুটির ভর ও ত্বরণের গুনফল হয়।
সুতরাং m ভরের একটি বস্তুর উপর F বল প্রয়োগের ফলে তার ত্বরণ a হয়, এই ত্বরণের মান বলের সমানুপাতিক ও ভরের ব্যস্তানুপাতিক (F = ma) এবং বল যে দিকে ক্রিয়া করে ত্বরণও সেই দিকে হয়। গাণিতিকভাবে একে এভাবে লিখা হয়: {\displaystyle {\vec {F}}={\frac {d{\vec {p}}}{dt}}\,=\,{\frac {d}{dt}}(m{\vec {v}})\,=\,{\vec {v}}\,{\frac {dm}{dt}}+m\,{\frac {d{\vec {v}}}{dt}}\,.}ভর ধ্রুবক ধরলে প্রথম টার্মটি চলে যায়। ত্বরণকে {\displaystyle {\vec {a}}\ =\ d{\vec {v}}/dt} হিসবে চিহ্নিত করলে সেই বিখ্যাত সমীকরণটি পাওয়া যায়: {\displaystyle {\vec {F}}=m\,{\vec {a}}\,,} যা থেকে আমরা জানতে পারি, "কোন বস্তুর ত্বরণ এর উপর প্রযুক্ত মোট বলের মানের সমানুপাতিক এবং এর ভরের ব্যস্তানুপাতিক।"

তৃতীয় সূত্র: প্রত্যেক ক্রিয়ারই সমান ও বিপরীত প্রতিক্রিয়া রয়েছে৷
এই নিয়ম তিনটি স্যার আইজাক নিউটন তার বিখ্যাত Philosophiæ Naturalis Principia Mathematica  বইয়ে ৫ জুলাই ১৬৮৭ সালে প্রথম সংকলন করেন। [৫]

প্রথম সূত্রের আলোচনা

প্রথম সূত্র থেকে আমরা দুটি বিষয় জানতে পারি (i) পদার্থের জড়তা বা জাড্য এবং (ii) বলের সংজ্ঞা।

পদার্থের জড়তা বা জাড্য : প্রথম সূত্রের আলোচনা থেকে আমরা দেখতে পাই, স্থির বস্তুর স্বাভাবিক ধর্ম স্থির থাকা এবং সচল অর্থাৎ গতিশীল বস্তুর স্বাভাবিক ধর্ম তার গতি বজায় রাখা। স্থির বস্তু নিজে থেকে চলতে পারেনা এবং গতিশীল বস্তু নিজে থেকে থামতে পারেনা। উভয়ক্ষেত্রেই বস্তু নিজে থেকে তার অবস্থার পরিবর্তন ঘটাতে অক্ষম। পদার্থের এই অক্ষমতাকে বলা হয় জড়তা বা জাড্য। এই কারণে নিউটনের প্রথম সূত্রকে জড়তা-এর সূত্র (Law of Inertia) বলা হয়। পদার্থের জড়তা ভরের সঙ্গে সম্পর্কযুক্ত – যে পদার্থের ভর যত বেশী, তার জড়তা তত বেশী। জড়তা বা জাড্য সংজ্ঞাস্বরূপ বলা হয় – পদার্থের যে ধর্মের জন্য কোনো স্থির বস্তু বা গতিশীল বস্তু যে অবস্থায় আছে সে সেই অবস্থায় বজায় রাখার চেষ্টা করে, সেইনিউটনের

পদার্থের জাড্যধর্ম দুই প্রকার – (i) স্থিতি জড়তা বা স্থিতিজাড্য ও (ii) গতি জড়তা বা গতিজাড্য।

স্থিতি জড়তা – স্থির বস্তুর চিরকাল স্থির থাকার প্রবণতাকে স্থিতিজড়তা বলে।

স্থিতি জড়তার উদাহরণঃ একটি গাড়ি হঠাৎ চলতে শুরু করলে সীটে বসা যাত্রী পিছন দিকে হেলে পড়ে। গাড়ি যখন স্থির ছিল তখন যাত্রীও স্থির ছিল। গাড়ি চলতে শুরু করার সঙ্গে সঙ্গে তার দেহের নীচের অংশ গাড়ির সংলগ্ন বলে গতিশীল হয়, উপরের অংশ তখনও স্থির অবস্থায় থাকতে চেষ্টা করে। ফলে যাত্রী পিছন দিকে হেলে পড়ে।

গতি জড়তা– গতিশীল বস্তুর সমগতিতে সরলরেখা বরাবর গতিশীল অবস্থা বজায় রাখার প্রবণতাকে গতি জড়তা বলে।

গতি জড়তার উদাহরণঃ চলন্ত গাড়ি হঠাৎ থামলে গাড়ির যাত্রী সামনের দিকে ঝুঁকে পড়ে বা হুমড়ি খেয়ে পড়ে যায়। গাড়ি যখন চলমান ছিল তখন যাত্রীর সমগ্র দেহই গতিশীল ছিল। গাড়িটি থামার সঙ্গে সঙ্গে যাত্রীর দেহের নিচের অংশ স্থির অবস্থায় আসে কিন্তু গতিজাড্যের জন্য দেহের উপরের অংশ এগিয়ে যেতে চায়। ফলে যাত্রী সামনের দিকে ঝুঁকে পড়ে বা হুমড়ি খেয়ে পড়ে যায়।

বল (Force) – নিউটনের প্রথম সূত্র থেকে জানা যায় স্থির বস্তুকে গতিশীল করতে কিংবা গতিশীল বস্তুর বেগ পরিবর্তন করতে বাইরে থেকে বস্তুটির উপর বল প্রয়োগ করতে হয়। সুতরাং, প্রথম সূত্র বলের সংজ্ঞা নির্দেশ করে।

বলের সংজ্ঞাঃ বাইরে থেকে যা প্রয়োগ করে বস্তুর স্থির অবস্থার বা সমগতিতে সরলরেখায় গতিশীল অবস্থার পরিবর্তন করা হয় বা করার চেষ্টা করা হয় তাকে বল বলে। বল একটি ভেক্টর রাশি, কারণ এর মান ও দিক দুই-ই আছে।

প্রসঙ্গ কাঠামোর ধারণাঃ

নিউটন তার প্রসঙ্গ কাঠামোর ধারনা প্রতিষ্ঠার জন্য গতির প্রথম সূত্র ব্যবহার করেন। গতির প্রথম সূত্র দাবি করে যে কমপক্ষে একটি প্রসঙ্গ কাঠামো বিদ্যমান, যে প্রসঙ্গ কাঠামোতে অন্য সকল সূত্র প্রযোজ্য হবে। এই প্রসঙ্গ কাঠামোকে বলা হয় নিউটনিয়ান বা প্রাথমিক প্রসঙ্গ কাঠামো।[৬]

Comments

Popular posts from this blog

পাথরকুচি পাতার উপকারিতা(patharkuchi Patti ka upkar)

রামায়ণ(RAMAYAN)full story of bengali

সুনামি সৃষ্টির কারণ