চাঁদ-the moon

                                     চাঁদ                                                
                                                                          ব্যাস৩,৪৭৪.৮ কিলোমিটার
ভর ৭.৩৪৯×১০২২ কিলোগ্রাম
অর্ধ-মুখ্য অক্ষ ৩৮৪,৪০০ কিলোমিটার
আবর্তন কাল ২৭ দিন ৭ ঘন্টা ৪৩.৭ মিনিট
মূল নিবন্ধ: চাঁদ
পৃথিবীর প্রায় এক চতুর্থাংশ ব্যাসার্ধ-বিশিষ্ট চাঁদ একটি অপেক্ষাকৃত বড় শিলাময় প্রাকৃতিক উপগ্রহ। গ্রহের আকার বিবেচনায় এটিই সৌরজগতের বৃহত্তম চাঁদ; যদিও ক্যারন তার বামন গ্রহ প্লুটো থেকে আপেক্ষিকভাবে বৃহত। পৃথিবীর ন্যায় অন্যান্য গ্রহের প্রাকৃতিক উপগ্রহগুলোকেও "চাঁদ" হিসেবেও অভিহিত করা হয়।

চাঁদ পৃথিবীর একমাত্র প্রাকৃতিক উপগ্রহ এবং সৌর জগতের পঞ্চম বৃহৎ উপগ্রহ। পৃথিবীর কেন্দ্র থেকে চাঁদের কেন্দ্রের গড় দূরত্ব হচ্ছে ৩৮৪,৪০৩ কিলোমিটার (২৩৮,৮৫৭ মাইল) যা পৃথিবীর ব্যাসের প্রায় ৩০ গুণ। চাঁদের ব্যাস ৩,৪৭৪ কিলোমিটার (২,১৫৯ মাইল) যা পৃথিবীর ব্যাসের এক-চতুর্থাংশের চেয়ে সামান্য বেশি। এর অর্থ দাড়াচ্ছে, চাঁদের আয়তন পৃথিবীর আয়তনের ৫০ ভাগের ১ ভাগ। এর পৃষ্ঠে অভিকর্ষ বল পৃথিবী পৃষ্ঠে অভিকর্ষ বলের এক-ষষ্ঠাংশ। পৃথিবী পৃষ্ঠে কারও ওজন যদি ১২০ পাউন্ড হয় তা হলে চাঁদের পৃষ্ঠে তার ওজন হবে মাত্র ২০ পাউন্ড। এটি প্রতি ২৭.৩ দিনে পৃথিবীর চারদিকে একটি পূর্ণ আবর্তন সম্পন্ন করে। প্রতি ২৯.৫ দিন পরপর চন্দ্রকলা ফিরে আসে অর্থাৎ একই কার্যক্রিয় আবার ঘটে। পৃথিবী-চাঁদ-সূর্য তন্ত্রের জ্যামিতিতে পর্যায়ক্রমিক পরিবর্তনের কারণেই চন্দ্রকলার এই পর্যানুক্রমিক আবর্তন ঘটে থাকে।

বেরিকেন্দ্র নামে পরিচিত একটি সাধারণ অক্ষের সাপেক্ষে পৃথিবী এবং চন্দ্রের ঘূর্ণনের ফলে যে মহাকর্ষীয় আকর্ষণ এবং কেন্দ্রবিমুখী বল সৃষ্টি হয় তা পৃথিবীতে জোয়ার-ভাটা সৃষ্টির জন্য অনেকাংশে দায়ী। জোয়ার-ভাটা সৃষ্টির জন্য যে পরিমাণ শক্তি শোষিত হয় তার কারণে বেরিকেন্দ্রকে কেন্দ্র করে পৃথিবী-চাঁদের যে কক্ষপথ রয়েছে তাতে বিভব শক্তি কমে যায়। এর কারণে এই দুইটি জ্যোতিষ্কের মধ্যে দূরত্ব প্রতি বছর ৩.৮ সেন্টিমিটার করে বেড়ে যায়। যতদিন না পৃথিবীতে জোয়ার-ভাটার উপর চাঁদের প্রভাব সম্পূর্ণ প্রশমিত হচ্ছে ততদিন পর্যন্ত চাঁদ দূরে সরে যেতেই থাকবে এবং যেদিন প্রশমনটি ঘটবে সেদিনই চাঁদের কক্ষপথ স্থিরতা পাবে।

পৃথিবী ও চাঁদের মহাকর্ষীয় বলের ক্রিয়ার ফলে পৃথিবীতে জোয়ার-ভাটা তৈরি হয়। এই সমরূপ ঘটনার ফলে চাঁদের টাইডাল লকিং তৈরি হয়: চাঁদের নিজের অক্ষে ঘূর্ণনের জন্য যে সময় লাগে সেই একই পরিমাণ সময় প্রয়োজন হয় পৃথিবীর কক্ষপথে আবর্তনের জন্য। যার ফলে পৃথিবীর দিকে সব সময় এটির একই পৃষ্ঠ থাকে। চাঁদের পৃথিবীকে আবর্তনের সময়, এটির বিভিন্ন অংশ সূর্যের আলো দ্বারা আলোকিত হয়, ফলশ্রুতিতে তৈরি হয় চন্দ্রকলার; এটির অন্ধকারচ্ছন্ন অংশটি আলোকিত অংশ থেকে পৃথক হয়ে থাকে সৌর টারমিনেটর দ্বারা।


পৃথিবী ও চাঁদের মধ্যে থাকা ব্যবস্থার বিস্তারিত চিত্র, যেখানে পৃথিবী ও চাঁদের বেরিকেন্দ্র ও তাদের ব্যসার্ধ্য দেখা যাচ্ছে। চাঁদের অক্ষটি নির্ধারণ করা হয়েছে ক্যাসিনির তৃতীয় সূত্র অনুসারে।
পৃথিবী ও চাঁদের আকর্ষণ ক্রিয়ায় সৃষ্ট জোয়ার-ভাটার ঘটনার ফলে, চাঁদ প্রতি বছর প্রায় ৩৮ মিমি/বছর হারে পৃথিবী থেকে দূরে সরে যায়। মিমিয়ন বছর ধরে, এই ক্ষুদ্র পরিবর্তনের ফলে—এবং পৃথিবীর দিন বৃদ্ধি পাওয়া ২৩ মাইক্রোসেকেন্ড/বছর—পরিশেষে বৃহত্তর পরিবর্তন করেছে।[২০৪] ডেভোনিয়ান সময় কালে, উদাহারণস্বরূপ (প্রায় ৪১০ মিলিয়ন বছর আগে) এক বছর পূর্ণ হতে ৪০০ দিন লাগত, যেখাবে প্রতিটি দিন ছিল ২১.৮ ঘন্টার।[২০৫]

পৃথিবীর জলবায়ু পরিবর্তন সাধনে সহায়তা করে, এতে প্রাণের বিকাশ ঘটাতে চাঁদ গুরুত্বপূর্ন ভূমিকা রেখেছে। জীবাশ্ম থেকে প্রাপ্ত তথ্য ও কম্পিউটার সিমুলেশন থেকে জানা যায় যে, চাঁদের সাথে জোয়ার-ভাটার ঘটনার কারণে পৃথিবীর অক্ষীয় ঢালটি সুস্থির রয়েছে।[২০৬] কিছু ত্বাত্তিক এটি ধারণা করে যে, পৃথিবীর নিরক্ষীয় স্ফিতি বরাবর অন্যান্য গ্রহ ও সূর্য দ্বারা প্রয়োগ করা সুস্থির টর্ক না থাকলে, পৃথিবীর ঘূর্ণনের অক্ষটি এলোমেলো ও অস্থির প্রকৃতির হত, প্রতি মিলিয়ন বছরে বিশৃঙ্খল পরিবর্তন নজরে আসত, যেটা দেখা যায় মঙ্গল গ্রহের ক্ষেত্রে।[২০৭]

পৃথিবী পৃষ্ঠ থেকে দেখা হলে, চাঁদ ও সূর্য প্রায় সম দূরত্বে থাকা প্রায় একই আকারের গোলাকার চাকতির মত দেখায়। এই দুটি বস্তুর কৌনিক আকার (বা ঘনকোণ) মিলে যায় কারণ, যদিও বা সূর্যের চাঁদের তুলনায় প্রায় ৪০০ গুণ বড়, একই সাথে সূর্য চাঁদের তুলনায় পৃথিবী থেকে ৪০০ গুণ দূরে অবস্থিত।[১৭১][১৭১] এর ফলে পৃথিবীতে পূর্ণ এবং বলয়াকার (আংটির মত) সূর্য গ্রহণ হয়ে থাকে।

চাঁদের গঠন সম্পর্কে প্রচলিত সর্বাধিক গ্রহণযোগ্য তত্ত্বটি হলো বৃহদায়তন-প্রভাব তত্ত্ব, যেখানে বলা হয়েছে যে এটি গঠিত হয়েছে মঙ্গল গ্রহের সমান আকৃতির 'থিয়া' নামক একটি মহাজাগতিক কণার সাথে সংঘর্ষের ফলে। এই মতবাদটি ব্যাখ্যা করে (অন্যান্য বিষয়ের মধ্যে) চাঁদে লৌহ এবং অস্থির উপাদানগুলির আপ

Comments

Popular posts from this blog

পাথরকুচি পাতার উপকারিতা(patharkuchi Patti ka upkar)

রামায়ণ(RAMAYAN)full story of bengali

সুনামি সৃষ্টির কারণ